দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির মোনালিসার লাস্যময়ী হাসির চিত্রকর্মটির সঙ্গে পরিচিত নন, এমন কাওকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। সেই চিত্রকর্মটির বিশেষ করে লাস্যময়ী হাসির রহস্যভেদ হয়েছে এবার!
বিখ্যাত চিত্রশিল্পী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির বিখ্যাত ছবি মোনালিসার ঠোঁটের কোনে হাল্কা লাস্যময়ী হাসির রহস্যভেদ করতে বিগত ৫শ’ বছর ধরে গবেষণা চলে আসছে। এই রহস্যভেদ করতে রথী-মহারথীরা যেখানে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, সেখানে টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অপেশাদার শিল্প-ইতিহাসবিদ উইলিয়াম ভার্বেল নিমিষেই বলে দিয়েছেন মোনালিসার সেই হাসির রহস্য!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আমেরিকার অধ্যাপক ভার্বেল মনে করছেন, ‘মোনালিসা ছিলেন ষষ্ঠ শতাব্দীর অন্যতম নারীবাদী মহিলা। লা গিওকোনডো চাইতেন- ক্যাথলিক চার্চে মহিলাদের অধিকার। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের অধিকার নিয়ে তিনি লড়াই চালিয়েছেন। তার এই নারীবাদী মুখ প্রকাশ পাচ্ছে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আঁকা বিখ্যাত তৈলচিত্র মোনালিসার এই ছবিতে। তার এই হাসির মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে তৎকালীন সমাজের নারীচেতনা।’
সংবাদ মাধ্যমের খবরে আরও বলা হয়েছে, ইতিহাসবিদ উইলিয়াম ভার্বেলের সদ্য প্রকাশিত বইয়ে ‘দ্য লেডি স্পিকস: আনকভারিং দ্য সিকরেট অফ দ্য মোনালিসা’য় লিখেছেন- ‘লা গিওকোনডো ছিলেন নারী অধিকারের অন্যতম নেত্রী। তিনি স্বপ্ন দেখতেন নিউ জেরুজালেমে নারী পুরুষের সমান অধিকার। লেডি গিওকনডো নামজাদা ব্যবসায়ী ফ্রান্সসেকো ডেল গিওকোনডোর স্ত্রী হলেও তিনি স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করতেন। একাধারে ৫ সন্তানের মা, আবার সমাজে অসহায়, পদদলিত নারীদের প্রতিবাদী জননেত্রী। মোনালিসার হাসির মধ্যেও ধর্মীয় ভাবাবেগও খুঁজে পেয়েছেন। সবকিছুই ফুটে উঠেছে তার হাসির মধ্যে’ এমনই ভার্বেলের দাবি।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি মোনালিসার ছবিতে প্রায় ৪০ রকমের সংকেত ব্যবহার করেছেন। ছবির প্রতিটি স্তরে এই সংকেতগুলি লুকিয়ে রয়েছে। মোনালিসার ডানদিকের প্রেক্ষাপটে ফুটে উঠেছে ক্যালভারির দৃশ্য, যেখানে যিশু খ্রিষ্টকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছে। অপরদিকে রয়েছে মাউন্ট অলিভস, তার পাশ দিয়ে রয়েছে স্বর্গদ্বারে যাবার রাস্তা।’
উল্লেখ্য, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির বিখ্যাত চিত্রকর্ম মোনালিসা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করা হচ্ছে। ইতিপূর্বে এক গবেষক বলেছিলেন, মোনালিসা ছবিটি ওই চিত্রশিল্পীর নিজেরই প্রতিকৃতি। চোখ, মুখ বিভিন্ন অবয়বকে ওই শিল্পীর প্রতিকৃতি বলেই মনে করা হয়।