দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীঘ্রই চালু হতে যাচ্ছে ডেমু ট্রেন। প্রথমে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচল করবে এই ডেমু ট্রেন। ডিজেল ইলেকট্রিক্যাল মাল্টিপল ইউনিট সংক্ষেপে ডেমু ট্রেনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ২৪ এপ্রিল। এর আগে ১৯ এপ্রিল অপরাহ্নে ট্রেনটি চালিয়ে দেখা হয় পরীক্ষামূলকভাবে।
ডেমু ট্রেনের সুবিধা
ডেমু ট্রেনে ৬টি বগি ও ৪টি ইঞ্জিন রয়েছে। মাঝখানে দুটি এবং দুই প্রান্তে দুটি মোট ৪টি ইঞ্জিন। ফলে ইঞ্জিনের প্রান্ত বদলের জন্য সময়ের অপচয় হবে না। ৬টি বগিতে যাত্রীদের বসার জন্য রয়েছে ৩০০টি আসন। আরও ৩০০ জন যাত্রী যেতে পারবেন দাঁড়িয়ে। তবে ব্যস্ত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে এ ধারণক্ষমতা চাহিদার তুলনায় নগণ্য। বর্তমানে এ রুটে চলাচলরত প্রচলিত ডিজেল ট্রেনে মোট ৭টি কামরা ও ইঞ্জিন রয়েছে। সময় কিছু বেশি লাগলেও প্রতি ট্রিপে এতে বসে ও দাঁড়িয়ে আসতে-যেতে পারেন গড়ে পনেরশ’ যাত্রী। এরপরও স্থান সংকুলান হয় না বললেই চলে। বাস ভাড়া বেশি এবং যানজট অসহনীয় বিধায় প্রায় সবাই যাতায়াত করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকেন ট্রেনে। ভাড়াও মাত্র ১০ টাকা। আর ডেমু ট্রেনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ টাকা।
ডেমু ট্রেনের বগি ও ইঞ্জিনের পাদানিগুলো বডির প্রায় ৬ ইঞ্চি ভেতরে বসানো এবং এর উচ্চতাও বেশি। ফলে যাত্রী বিশেষ করে মহিলা ও শিশুদের জন্য বেশ সমস্যার সৃষ্টি হবে। তদুপরি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে কমলাপুর ও নারায়ণগঞ্জ স্টেশন ছাড়া প্রায় কোথাও পস্নাটফর্ম নেই বললেই চলে। থাকলেও নিচু। সেক্ষেত্রে ডেমু ট্রেনের জন্য পস্নাটফর্মগুলো জরুরি ভিত্তিতে উঁচু করতে হবে। রেলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ট্রেনের বগি ও ইঞ্জিন যাত্রীদের সহজে যাতায়াত ও ওঠানামার জন্য স্থানীয়ভাবে সংস্কার করে নেয়া হবে। সেটা করতে গেলে দৃষ্টিনন্দন ট্রেনগুলোর সৌন্দর্যহানি হতে পারে। চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছর আরও ১৪টি ট্রেন আমদানির কথা রয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ, ওই সব ট্রেনের বগি ও ইঞ্জিন যেন বাংলাদেশের অবকাঠামোর উপযোগী করে নির্মাণ করা হয়। সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেবেন, এটাই কাম্য।
সর্বাধুনিক যানবাহন আমদানি এবং তা ব্যবহারের ব্যাপারে দ্বিমতের কোন অবকাশ নেই। তবে তা অবশ্যই হতে হবে স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের উপযোগী, লাগসই প্রযুক্তি সংবলিত, সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য, সর্বোপরি নিরাপদ। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে কিছু সময় বাঁচানোর জন্যই ডেমু ট্রেন আমদানি করা হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা ও উপযোগিতা বিবেচনা করা হয়নি। প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক যাত্রীর চাপ সামাল দেয়া যাবে কীভাবে, তাও রাখা হয়নি মাথায়। তবে সময় বাঁচানোর কথা বলা হলেও এ রুটে যে ঘনবসতি ও ঘিঞ্জি বস্তি দেখা যায়, সেগুলো রয়েছে অবৈধ দখলে। এসব স্থায়ীভাবে অপসারণ না করা পর্যন্ত ডেমু ট্রেনেও সময় বাঁচানো যাবে না বলেই অনেকেই মনে করেন।
পর্যায়ক্রমে এই ট্রেন অন্যান্য লাইনেও চালালে যাত্রীরা অনেক উপকৃত হবেন বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন। (তথ্যসূত্র: দৈনিক যুগান্তর)।