শান্তির শহরে রয়েছে মাত্র একজন পুলিশ!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাত্র একজন পুলিশ একটি শহরে থাকলে সে শহরের মানুষ নিশ্চয়ই রাতে ঘুমাতে পারে না, এমনই তো হওয়ার কথা? কিন্তু ঘটনাটি তা নয়। অপরাধি নেই বলেই পুলিশের প্রয়োজন হয় না!

এমন একটি শহরের কথা শুনলে যে কেও আশ্চর্য না হয়ে পারবে না। সত্যিই তাই। এতোবড় একটি শহরে মাত্র একজন পুলিশ! একজন পুলিশ ডিউটি করেন। তাতেই শহরের মানুষ নিরাপদ এবং শান্তিতে বসবাস করছেন! এমন কথা হয়তো কারও বিশ্বাস নাও হতে পারে। কিন্তু ঘটনাটি সত্যি।

আসলে আমরা অনেক সময় উঠতে-বসতে চায়নাদের গাল-মন্দ করে থাকি। চায়নারা আমাদের প্লাসটিক চাল খাওয়াচ্ছে। কৃত্রিম ডিম খাওয়াচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এমন গালমন্দর পরও তাদের কুর্নিশ জানাতে ইচ্ছা করে, যখন আমরা শুনি, এই চায়নাতে এমন একটি শহর রয়েছে, যেখানে গত ১০ বছরে একটিও অপরাধ সংঘটিত হয়নি।

যেহেতু অপরাধ নেই তাই সেখানে পুলিশেরও প্রয়োজন পড়ে না। ওই শহরে তাই একজন মাত্র পুলিশ রয়েছেন। যিনি একাই পুরো শহর টহল দিয়ে বেড়ান। তবে আশ্চর্যের আরেকটু বাকি রয়েছে। আর তা হলো ওই পুলিশকর্মী আবার চোখে দেখেন না। গ্লুকোমায় চোখ হারিয়েছেন ২০০২ সালে। কিন্তু তারপরেও চাকরিটি তার রয়েছে। তবে সেটি কারও করুণায় নয়। রয়েছেন নিজ দক্ষতায়। যিনি একা একটা শহরকে এমন ঠাণ্ডা রাখতে পারেন তাঁকে সরানো হবেই বা কেনো? প্রতিদিন নিয়ম করে পুলিশের পোশাকে বেরিয়ে পড়েন। তার সঙ্গে থাকেন তার স্ত্রী।

চীনের দক্ষিণ পশ্চিম শহর লানবা। সেখানে গেলে আপনার সঙ্গে দেখা হবে বছর তেতাল্লিশ বয়সের ওই পুলিশ অফিসার প্যান ইয়ংয়ের। যিনি দৃষ্টিহীন হলেও নিজের কাজের শহরটাকে চেনেন হাতের তালুর মতোই। চেনেন সেখানকার মানুষগুলোকেও। আর তাই সিয়া চং পুলিশ স্টেশনের তিনিই একমাত্র পুলিশ আধিকারিক।

একেবারে ছোট এলাকা নয়। সিয়া চং রেলওয়ে স্টেশনকে ঘিরে চারদিকে ৩৮ কিলোমিটার এলাকা। যার মধ্যে রয়েছে ৩টি প্রশাসনিক গ্রাম, ১৩টি ছোট গ্রাম। এসব কিছুর দায়িত্বে রয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা প্যান। গত ১০ বছরে এই শহরে না হয়েছে কোনও খুন-খামারি, হয়নি চুরি-ছিনতাই, না হয়েছে কোনো দুর্ঘটনা! এর নেপথ্য ভূমিকায় আরও একজনের নীরব ভূমিকা রয়েছে। তিনি প্যানের স্ত্রী তাও হংগিং। ৪৬ বছর বয়সের ওই মহিলা লোকাল রেলওয়ে স্টেশনের রক্ষী। প্রতিদিন পুলিশ আধিকারিক স্বামীর সঙ্গে তিনিও সারা শহর চক্কর মারেন। তার ভূমিকাও অগ্রগণ্য। এমন একজন দম্পতি এবং এমন একটি শান্তিপ্রিয় শহর সত্যিই দুষ্পাপ্যের মতোই। আমরাও যদি এমন একটি শহরে বসবাস করতে পারতাম!

This post was last modified on জানুয়ারী ২৭, ২০২১ 10:56 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

এনার্জিপ্যাকের সঙ্গে চীনের আনহুই প্রাদেশিক গণ-কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনের আনহুই প্রাদেশিক গণ-কংগ্রেসের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও…

% দিন আগে

জয়া এবার মা হচ্ছেন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জনপ্রিয়তার শিখরে আছেন অভিনেত্রী জয়া। দুই বাংলার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী…

% দিন আগে

মার্কিন পতাকা নামিয়ে ফিলিস্তিনি পতাকা উড়লো হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলমান ক্যাম্পাস বিক্ষোভের…

% দিন আগে

বাংলা সাল যেভাবে এলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বৈশাখ এলে বাংলা সালের কথা আমাদের মনে পড়ে। আসলে এই…

% দিন আগে

নদী ও নৌকা: এক অসাধারণ গ্রামের দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১…

% দিন আগে

আপনি কী জনেন দিবানিদ্রার অভ্যাসে বাড়তে পারে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দিনের বেলায় ঘুমানোকে আমরা ভাত ঘুম বলে থাকি। তবে দিনের…

% দিন আগে