দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিজ্ঞানীরা এবার দাবি করেছেন যে, মস্তিষ্ক হতে স্মৃতি মুছে দেওয়া সম্ভব! আমেরিকার নতুন এক ডকুমেন্টরিতে বলা হয়েছে, বিজ্ঞানীরা এ সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছেন।
আমরা জানি কম্পিউটারের মেমোরি অনায়াসে মুছে ফেলা সম্ভব। তবে তাই বলে মানুষের মস্তিষ্ক থেকেও কি স্থায়ীভাবে কোনো স্মৃতি মুছে ফেলা সম্ভব? বিজ্ঞানীরা এবার এমনই একটি গবেষণায় মনোনিবেশ করেছেন। যার মাধ্যমে যারা পুরনো কোনো স্মৃতি নিয়ে দারুণ মানসিক যন্ত্রণায় রয়েছেন। তাদের এই যন্ত্রণা হতে মুক্তি পেতে নিমিষেই ওই স্মৃতিটুকু মুছে ফেললেন তারা। বিষয়টা সায়েন্স ফিকশন বলে মনে হলেও বিজ্ঞানীরা এমন প্রচেষ্টার কাছাকাছি চলে এসেছেন বলে দাবি করছেন।
বিভিন্ন পুরস্কারপ্রাপ্ত নোভার ডকুমেন্টরি সিরিজ ‘মেমোরি হ্যাকারস্থ-এ এই বিষয়টি উঠে এসেছে। সেখানে মস্তিষ্ক হতে কোনো স্মৃতি বেমালুম মুছে ফেলার পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। চেষ্টা চালানো হচ্ছে, মানবজাতির কল্যাণে কিভাবে এই প্রযুক্তিটিকে কাজে লাগানো যায়।
ডকুমেন্টরি নির্মাতারা বলেছেন, ইতিহাস দেখিয়েছে যে, স্মৃতি একটা টেপ রেকর্ডারের মতোই কাজ করে, যা বিভিন্ন পুরনো তথ্য ধারণ করে রাখে। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান দেখাচ্ছে যে, স্মৃতিকে মুছে ফেলা সম্ভব। হোক তা লিখিত কিংবা অলিখিত। মানুষের স্মৃতি নিয়ন্ত্রণের উপায় এটির মাধ্যমে বিকশিত হচ্ছে।
এই ডকুমেন্টরিতে দেখানো হয়েছে, সেন্ট লুইসের ১২ বছর বয়সী এক শিশু হলো জেক হাসলার। ৮ বছর বয়স হতে এখন পর্যন্ত সে তার প্রতিটা খুঁটিনাটি স্মৃতি মনে করে রাখতে সক্ষম। এই ছেলেটি এই যাবতকালের কনিষ্ঠতম, যার ওপর হাইলি সুপিরিয়র অটোবায়োগ্রাফিক্যাল মেমোরি প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হয়। অতীতের নগন্য ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে পার্থক্য করার মতো তার স্মৃতিগুলো মুছে ফেলা হয়েছে। এতে বলা হয়, যন্ত্রণাদায়ক স্মৃতি মুছে ফেলা নিয়ে কাজ করছেন বিশ্বখ্যাত নিউরোলজিস্ট আন্দ্রে ফেনটন।
আন্দ্রে ফেনটন বলেন, ‘মস্তিষ্ক যে কাজগুলো করে থাকে তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ হলো ভুলে যাওয়া। মানুষের স্মৃতি মুছে ফেলার বিষয়ে বর্তমানে যে পর্যন্ত এগোনো গেছে, তা একটি বিশাল বরফখণ্ডের উপরিতল জানার মতো বিষয় মাত্র। এখনও ভেতরের কিছুই দেখা হয়নি।’
টেলিগ্রাফ উদ্বৃত করে প্রকাশিত খবরে আরও বলা হয়, লন্ডন সাউথ ব্যাঙ্ক ইউনিভার্সিটির এক মনোবিজ্ঞানী জুলিয়া শ মস্তিষ্কে ভুল স্মৃতি ঢুকিয়ে দেওয়ার কাজ কর যাচ্ছেন। এর মাধ্যমে অপরাধীদের নিকট হতে দোষ স্বীকারের মতো সফলতা অর্জিত হয়েছে বলে দাবি করা হয়।