দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোনো জন্মান্ধ শুধুমাত্র শব্দ শুনে পাখির নাম বলতে পারেন এমন কথা আগে কখনও শোনা যায়নি। তবে এই অসাধ্যকে সাধন করেছেন উরুগুয়ের ২৯ বছর বয়সী পাবলো কোলাসো জন্মান্ধ।
সত্যিই অবাক করার মতো ঘটনা এটি। কারণ যে কোনো দিন কোনো পাখি তো দূরে থাক কিছুই চোখে দেখেন নি। নিজের দুই চোখে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের অনুসঙ্গ পাখি দেখার সুযোগ তার কোনোদিন হয়নি। তবে তিনি চোখে না দেখলেও ডাক শুনে রপ্ত করেছেন পাখির নাম। আজব এক ঘটনা! তিনি ডাক শুনেই বলে দিতে পারেন কোনো পাখির কোনো নাম! পাবলো কোলাসো অন্তত ৭২০ প্রজাতির তিন হাজারেরও বেশি পাখি শনাক্ত করতে পারেন!
উরুগুয়ের ২৯ বছর বয়সী জন্মান্ধ পাবলো কোলাসো ছোটবেলা হতেই পাখির শব্দ খুব স্পষ্টভাবে বুঝতে পারতেন। এই ধরনের শ্রবণশক্তি বিশ্বের প্রতি ১০ হাজার মানুষের মধ্যে মাত্র একজনের থাকে। পাবলোর বাবা তাকে এনসাইক্লোপিডিয়া হতে পাখির নাম পড়ে ও অডিও রেকর্ডারে ওই সব পাখির শব্দ শোনাতেন। আর তখনই তার বাবা বুঝতে পেরেছিলেন, তার ছেলে পাখির শব্দ মনে রাখতে পারেন।
এভাবে এক সময় পাখির শব্দের রেকর্ড করা ও শেখা পাবলোর এক নেশায় পরিণত হয়। আর তাই ২০০৩ সালে তিনি এক পাখিবিজ্ঞানীর কাছে যান। সেই পাখি বিজ্ঞানী একটি রেকর্ডার দিয়েছিলেন তাকে।
সম্প্রতি পাবলো সুমেরু অঞ্চল ভ্রমণ সম্পন্ন করেন ও ‘সি লায়ন’, সিল এবং গলে যাওয়া বরফের শব্দও রেকর্ড করেছেন।
সংবাদ মাধ্যমকে পাবলো বলেন, ‘আমার এই শ্রবণক্ষমতা বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে সহযোগিতা করেছে। এতে সাউন্ডট্র্যাক ডকুমেন্টারিতে কাজ করার সুযোগও পেয়েছি।’
এই অনন্য ক্ষমতার জন্য ২০১৪ সালে পাবলো নেট জিও টেলিভিশন প্রোগ্রামের সর্বোচ্চ পুরস্কার হিসেবে ৪৫ হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার পেয়েছেন। পুরস্কারের বেশির ভাগ অর্থ দিয়ে পাবলো অডিও রেকর্ডার কিনেছেন! সত্যিই এমন জন্মান্ধ জগতে দেখা ভার!