দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দক্ষিণ কোরিয়ার ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্যামসাং দাবি করেছেন যে, পঞ্চম প্রজন্মের তারবিহীন যোগাযোগ পদ্ধতি বা ৫জি সমর্থনযোগ্য মোবাইল প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সফলতা পেয়েছেন তারা৷ সোমবার স্যামসাং কর্তৃপক্ষের বরাতে এ তথ্য প্রকাশ করেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। ২০২০ সালের মধ্যে মোবাইল ব্যবহারকারীদের ৫জি সেবা দেয়ার স্বপ্ন দেখছে কোম্পানিটি।
স্যামসাং বলেছেন, ৫জি সেবা চালু করতে কোম্পানির ৬৪ এন্টেনা উপাদান প্রয়োজন যাতে করে মোবাইল ডিভাইসটি বাস্তব সময় সংকেত বিনিময় করতে পারে । ৫জি দিয়ে ৪জি এলটিই (LTE, লং-টার্ম এভ্যুলিউশন) নেটওয়ার্কের তুলনায় ‘কয়েকশো গুণ বেশি পর্যন্ত দ্রুত’ সেবা পাওয়া যাবে৷ এর ফলে মোবাইল ব্যবহারকারীরা ‘কোনোরকম সীমাবদ্ধতা’ ছাড়াই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ডিজিটাল মুভি আদান-প্রদান করতে পারবে৷ অর্থাৎ, পুরো একটি মুভি ডাউনলোড করা যাবে এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে!
৫জি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী সর্বোচ্চ প্রতিসেকেন্ডে ১০ গিগাবিট ডাটা ডাউনলোড এবং আপলোড করতে পারবেন যা ফোরজি এলটিই তে সর্বোচ্চ ৭৫ এমবিপিএস । স্যামস্যাং ২৮ গিগাহার্জ ফ্রিকোয়েন্সটি ব্যান্ড ইউজ করে ১ গিগাবিট ডাটা প্রতিস্থাপন করেন সাম্প্রতিক পরীক্ষায় !
তাদের বিবৃতিতে আরো জানা যায় ‘‘ব্যবহারকারীরা মোবাইলে থ্রিডি মুভি দেখতে পারবে, থ্রিডি সংস্করণের গেমসও খেলতে পারবে৷ এছাড়া ইউএইচডি (আলট্রা হাই-ডেফিনিশন) কন্টেন্ট ব্যবহার ও চিকিৎসা সেবায় ব্যাপক অগ্রগতি আনবে ৫জি৷
স্যামসাংয়ের প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, পরবর্তী প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তির নেতৃত্ব নেয়ার জন্য প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র বেড়ে গেছে। আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করতে এবং যথাসময়ে মোবাইল ব্রডব্যান্ড বাজারে আনতে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
উল্লেখ্য , ৫জি প্রযুক্তিতে সফলতার দাবি করা প্রথম কোম্পানি স্যামসাং নয়৷ এর আগে ফেব্রুয়ারিতে জাপানি কোম্পানি এনটিটি ডোকোমো ৫জি নেটওয়ার্কে সফল হয়েছেন এই দাবি করেছিলো। অবশ্য তারা কবে থেকে ৫জি চালু করতে পারবে সে ব্যাপারে কোনো তথ্য দেয়নি৷ এদিকে পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তি উন্নয়নে ৫০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৬৫ দশমিক ৪মিলিয়ন ডলার) অনুদানের ঘোষণা দিয়েছিলেন ইউরোপিয়ান কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট নেলি ক্রোয়েস। এছাড়াও সেলফোন অপারেটর ও সরকারের উদ্যোগে ব্রিটেনের সারে বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে বর্তমানে গবেষণা করছে। ৫জি নিয়ে কাজ করতে সারে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গবেষণাকেন্দ্র চালুর জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। বিভিন্ন সেলফোন অপারেটর, অবকাঠামো সুবিধা দেয় এমন কোম্পানি ও সরকার মিলে এ গবেষণার জন্য দিয়েছে ৪ কোটি ৩০ লাখ ইউরো।
আশা করা যায়, মোবাইল ব্যবহারকারীরা খুব দ্রুতই পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তি হাতের নাগালে পাচ্ছে , যেখানে এক সেকেন্ডেই একটি মুভি নামিয়ে ফেলা যাবে , সে পর্যন্তই অপেক্ষা ।
তথ্যসূত্রঃ দি টেক জার্নাল