দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যারা শাহরুখ-কাজল অভিনীত জনপ্রিয় ফিল্ম ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ দেখেছেন তারা বুঝবেন এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে এবার রিয়েল লাইফে!
‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ ছবিতে বাবার অসম্পূর্ণ প্রথম প্রেমকে পরিণতি দিয়েছিল মাত্র ৮ বছরের মেয়ে। মায়ের মৃত্যুর পর বাবার সঙ্গে তার সাবেক প্রেমিকার বিয়ে দেয় সে। এবার এমনই একটি বাস্তবের ঘটনায় এবার মেয়েরা তাদের বিধবা মায়ের বিয়ে দিলেন ৩২ বছরের পুরনো প্রেমিকের সঙ্গে। তারপর নিজের ফেসবুকের পাতায় ফলাও করে তুলে ধরলেন ৫২ বছরের মা এবং ৬৮ বছরের বর্তমান বাবার প্রেমকাহিনী!
আসলে ক’জনইবা এমন সাহসী ভূমিকা রাখতে পারেন? ভারতের কেরালার কোল্লামের আথিরা এবং আশিলি যা করে দেখিয়েছেন, তা যে কারও ভাবনা-চিন্তাকে একেবারে বদলে দিতে পারে। ঘটনাটা খোলসা করা যাক। আথিরার মা অনিথা যখন দশম শ্রেণীতে পড়েন তখনকার কথা। সময়টা ছিলো ১৯৮৪ সাল।
একটি অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে পরিচয় হয় এক টিউশন সেন্টারের শিক্ষক তথা CPM নেতা জি বিক্রমণের। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে এক সময় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু তাদের বিয়েতে সে সময় বাধা হয়ে দাঁড়ান অনিথার বাবা। সেনাবাহিনীর অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার রাশভারী ওই ব্যক্তি জোর করে অন্যত্র মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেন।
পরিবারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে উঠতে না পেরে এক সময় মদ্যপানে আসক্ত স্বামীকেই মেনে নিতে বাধ্য হন অনিথা। অপরদিকে বিক্রমণ মনের দুঃখে চলে যান চাভারায়। তিনি তারপর আর বিয়ে করেননি। রাজনীতির কাজ করেই কাটিয়ে দিয়েছেন সারাটি জীবন।
তারপর এক সময় অনিথার কোলে আসে দুটি কন্যা সন্তান; আশিলি ও আথিরা। আথিরার বয়স যখন ৮ বছর, তখন মদ্যপান করে একদিন আত্মঘাতী হন তার বাবা। তারপর হতে আর একটা নতুন জীবন সংগ্রামে নিজেকে সপে দেন অনিথা।
দুই মেয়েকে মানুষ করতে গিয়ে কখন যে তার স্মৃতি থেকে হারিয়ে যেতে বসেছিলো বিক্রমণের নাম, তা তিনি নিজেও বুঝতে পারেননি। তবে তার সেই স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেন তার দুই মেয়ে।
দুই মেয়ে যখন মায়ের প্রথম প্রেমের কথা জানতে পারেন, তখন তারা সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করেন বিক্রমণের সঙ্গে। মায়ের প্রেমকে পূর্ণতা দিতে দু’জনের বিয়ে দেবেন বলে স্থির করেন তার দুই মেয়ে। প্রথমে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়লেও, পরে অনিতা ও বিক্রমণ বিয়েতে রাজি হয়ে যান। তবে তারা শর্ত দেন যে, আগে দুই মেয়ের বিয়ে দেবেন, তারপর তারা বিয়ে করবেন।
দু’মাস হলো বিয়ে হয়েছে অথিরার। তাই এবার ধূমধাম করে বিধবা মায়ের সঙ্গে তার ৩২ বছরের পুরনো প্রেমিকের বিয়ের আয়োজন করলেন অনিথার বাবা এবং তারই দুই মেয়ে!
নিজের ফেসবুক পাতায় মায়ের প্রেমকথা এবং ৫২ বছর বয়সে তার বিয়ের খবর তুলে ধরেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। একেবারে সাড়া ফেলে দিয়েছেন আথিরা।
অনেকেই বলেছেন, মাকে তার প্রাপ্য ও অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে সত্যিই যোগ্য সন্তানের ভূমিকা পালন করেছেন তার দুই মেয়ে। এই দুই বোনকে তাই কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলেই। সিনেমাতে আমরা যা দেখেছিলাম, এবার বাস্তবে দুই মেয়ে তা করে সকলকেই তাক লাগিয়ে দিয়েছেন!