দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মন্দিরে ভক্তি-শ্রদ্ধার জন্য ভক্তরা আসেন। প্রতিটি মন্দিরেই হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের ভীড় দেখা যায়। কেরলের মন্দিরের দরজা ঘিরে রয়েছে নানা রোমহর্ষক কাহিনী!
কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের শ্রী অনন্তপদ্মনাভস্বামী মন্দিরের খ্যাতি বহু পুরোনো। এই মন্দিরের অধিষ্ঠাতা দেবতার নামেই শহরটির নাম রাখা হয়েছে।
এই মন্দিরটির ৭ নম্বর দরজাটি খোলার জন্য কোনো স্ক্রু, তালা কিংবা অন্য কিছু নেই। কিংবদন্তি রয়েছে যে, এই প্রকোষ্ঠের দরজা ‘নাগবন্ধনম’ দ্বারা আবদ্ধ। তবে বিষয়টি এমনই যে, ব্যস্ত শহরের বুকে জনপ্রিয় এই মন্দিরটিতেই বিরাজ করছে এমন এক রহস্য, যাকে কোনো অবস্থাতেই উপেক্ষা করা সম্ভব নয়।
এই মন্দিরের অধিষ্ঠাতা দেবতা অনন্তশায়ী বিষ্ণু। এই মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ পরিচালিত হয়ে থাকে ত্রিবাঙ্কুরের রাজপরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠিত ট্রাস্টের মাধ্যমে।
প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক পুণ্যার্থী এই মন্দিরে আসেন। তাই কোনো ‘গোপন’ স্থানও বলা যাবে না এই শ্রী অনন্তপদ্মনাভস্বামী মন্দিরকে।
তবে বছর কয়েক আগে শ্রী অনন্তপদ্মনাভস্বামী মন্দির এক রহস্যের জন্য সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হয়ে উঠে আসে। ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অনুসন্ধান চালিয়ে এই মন্দিরের অভ্যন্তরে ৬টি প্রকোষ্ঠের সন্ধান মেলে। যার প্রত্যেকটি হতে উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ। সব মিলিয়ে কয়েক লক্ষ কোটি টাকার সোনা ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র পাওয়া যায় সেখানে।
অবশ্য এটি ভারতের কোনো জনপ্রিয় মন্দিরের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী কানো বিষয় নয়। যুগ যুগ ধরে সঞ্চিত মন্দির-সম্পদের কাহিনী প্রায় সকলেরই জানা।
তবে এই শ্রী অনন্তপদ্মনাভস্বামী মন্দিরের মূল রহস্য এই ৬টি প্রকোষ্ঠে নয়, যতো রহস্য ৭ নম্বর প্রকোষ্ঠটিকে ঘিরেই। শত চেষ্টা করেও আজ পর্যন্ত খোলা সম্ভব হয়নি ৭ নম্বর প্রকোষ্ঠটি। এই প্রকোষ্ঠের দরজায় দুটি সাপের চিহ্ন আঁকা। কোনো স্ক্রু, তালা বা অন্য কিছু নেই, যা দিয়ে তা খোলা যেতে পারে এটি। কিংবদন্তি রয়েছে যে, এই প্রকোষ্ঠের দরজা ‘নাগবন্ধনম’ দ্বারা আবদ্ধ।
কিংবদন্তি রয়েছে যে, রাজা মার্তণ্ডবর্মার আমলে ১৬ শতকে কিছু সিদ্ধপুরুষ এই ক্রিয়া দ্বারা এই প্রকোষ্ঠকে বন্ধ করে দেন। এই দরজা খুলতে হলে প্রয়োজন ‘নাগ’ মন্ত্রের অ্যান্টিডোট ‘গরুড় মন্ত্র’। তবে এই মন্ত্র কেবল জানা থাকলেই চলবে না, জানতে হবে তা উচ্চারণের রীতিও! জানতে হবে সেই মন্ত্রের প্রকৃত সুরও। কার্যত: সেই সুর বিলুপ্ত হয়ে যাওয়াতেই নাকি এই দরজা খোলা সম্ভব হচ্ছে না। বন্ধ দরজায় কান পাতলে নাকি ভিতরে পানির স্রোতের শব্দ শোনা যায়। কারও কারও মতে, প্রকোষ্ঠের ভিতরে সাপের হিস-হিস শব্দও নাকি শোনা যায়।
অনেকেই বলেন, এই প্রকষ্ঠের মধ্যে রাখা রয়েছে সৃষ্টিরহস্যের চাবিকাঠি। কারও মতে, ভারতীয় জ্যোতিষের কোনো গোপন নথিও থাকতে পারে এখানে।
তবে এ রহস্য সবার কাছেই এখনও রহস্যই রয়ে গেছে। এই রহস্যের জট আদৌ কি উন্মোচন হবে নাকি হবে নাকি রহস্যই রয়ে যাবে? এই প্রশ্নই যেনো সবার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে প্রতিনিয়ত।