দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রযুক্তি মানুষকে উন্নতির শিখরে নিয়ে গেছে। লিফটের একটি বাটনে টিপ দিয়ে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে মানুষ উঠে যাচ্ছে ১০ তলা ২০ তলা বা আরও অনেক উপরে! কিন্তু লিফটে আয়না কেনো থাকে সেটি আমাদের অজানা। আজ জানুন বিষয়টি।
প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবন। তবে এই কার্যকারণের অনেক কিছুই আমাদের অজানা। হাইরাইজ বিল্ডিং বাড়ার পাশাপাশি বাড়ছে লিফটের ব্যবহার। খুব সহজেই নিচ থেকে উপরে, উপর থেকে নিচে উঠা-নামা করার সহজ মাধ্যম হলো লিফট। আবার এই সুবিধার সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য কিছু কিছু ভবনে রাখা হচ্ছে একাধিক লিফট। এইসব লিফটে আপনারও হয়তো চোখে পড়েছে আয়না। আপনি হয়তো মনে করেছেন আয়না রাখা হয়েছে চেহারা দেখার জন্য। কিন্তু আসলেও কী তাই? ওখানে চেহারা দেখার কারণ কী? এতোদিন প্রশ্ন না জাগলেও হয়তো এই রিপোর্টটি পড়ার পর নিশ্চয়ই প্রশ্ন আপনার মনেও দানা বাঁধতে শুরু করেছে যে, এখানে আয়না রাখার কারণটি কি?
এই লিফট যখন প্রথম শুরু হয়েছিলো তখন লিফট খুবই ধীরগতির ছিল। সিঁড়ি ভেঙে সেইসব লিফটের আগেই যাওয়া যেতো। কেবল রোগী আর বৃদ্ধরা তখন ওই লিফট ব্যবহার করতেন। তবে প্রকৌশলীরা কী আর বসে থাকেন! তারাও গতি বাড়াতে গবেষণা শুরু করলেন। তাতে গতি বাড়লো আরেকটু, তবে অভিযোগ তখনও কমলো না।
এটা দেখার পর প্রকৌশলীরা আরও জোরেসোরে গবষেণা শুরু করলেন। গবেষণার অংশ হিসেবে তারা নিজেরা কয়েকবার লিফটে চড়ে দেখতে গিয়ে নতুন জিনিস আবিষ্কার করলেন। সেটি নিয়ে মনোবিদদের সঙ্গে আলোচনা করে জানতে পারলেন, আসলে পুরো ঘটনাটিই মানসিক। লিফটের ভিতর যাত্রীরা কিছুই করতে না পেরে, তারাই এই ধীরগতির ধারণা তৈরি করেছেন।
তখন যাত্রীদের বিরক্তি ও ধীরগতির ধারণা মেটাতে লিফটে লাগানো হলো আয়না! আয়না লাগানোর পর এক জরিপে দেখা যায় যে, অধিকাংশ যাত্রীর অভিমত হলো লিফটের গতি বেড়েছে!
মনোচিকিৎসকরা বলেছেন, ওপরের দিকে ওঠাটা সব সময়ই শরীরের পক্ষে অস্বস্তিকর বিষয়। আগে আয়না না থাকায় তারা সেই সময়টুকু লিফটে কোনো কাজ করতে পারতেন না। ঠাঁয় একভাবে বিরক্তিকর অবস্থা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন। তবে আয়না লাগানোটা মূলত যাত্রীকে ব্যস্ত রাখা ছাড়া কিছুই নয়। এতে করে তারা অন্তত নিজের চেহারা দেখে বিভিন্ন কিছু ভাবতে সুযোগ পায়। আর ওই ভাবনার কারণেই দ্রুত সময় পার হয়ে যায়।
মনোবিদরা তাদের মত দিয়ে বলেছেন, ক্লাসট্রোফোবিয়া আক্রান্ত রোগীরাও এই আয়নার কারণে লিফট আরোহণে অনেকটা সুস্থ বোধ করেন। ক্লাসট্রোফোবিয়া হলো এক ধরনের ভয়, এই রোগে আক্রান্তরা লিফটে ওঠার পর নিজেদের ছোট্ট একটি ঘরে বন্দী মনে করতে পারেন। আয়না তাদেরকে প্রশস্ত একটা জায়গা দেখিয়ে থাকে। যা তাদের স্বস্তি বোধ করতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। আর তাই লিফটে সব সময় বা বলা যায়, প্রায় লিফটে আয়না ব্যবহার করা হয়।