দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জোঁককে আমরা রক্তশোষী জীব হিসেবেই জানি। তবে এবার এই জোঁককেই ব্যবহার করা হচ্ছে চর্মরোগের চিকিৎসায়! মুখে জোঁক লাগিয়ে সেই চিকিৎসাকরা হচ্ছে!
খবরে বলা হয়েছে, এমন অভিনব চিকিৎসা করছেন চিকিৎসকরা। জোঁক শরীরের দূষিত রক্ত শুষে নিয়ে বিশুদ্ধ রক্তের প্রবাহ বৃদ্ধি করে- এমন ধারণা থেকেই এই চিকিৎসা করা হচ্ছে। সেই সুবাদে নাকি চর্মরোগ হতেও মুক্তি ঘটে। ভারতের ছত্তিশগড়ের জিআই রোডে অবস্থিত আয়ুর্বেদিক হাসপাতালে এমন এক অভিনব পদ্ধতিতেই চলছে চর্মরোগের চিকিৎসা!
হাসপাতালের চিকিৎসক উত্তমকুমার নির্মলকর জানিয়েছেন, জোঁকের লালায় হিপেরিন, কেলিন ও বেডলিন নামের রাসায়নিক পদার্থ থাকে। এগুলি ব্রণের মতো চর্মরোগ সারাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। যারা মুখে ব্রণের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের ব্রণের উপরে ছেড়ে দেওয়া হয় জ্যান্ত জোঁক! তখন ওই জোঁক দূষিত রক্ত শুষে নিতে শুরু করে। পরিণামে সংশ্লিষ্ট অংশে শুদ্ধ রক্ত প্রবাহিত হয়ে থাকে বলে চিকিৎসকদের দাবি। ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট ধরে এই রক্তশোধন প্রক্রিয়া চালানো হয়।
চিকিৎসকরা আরও জানিয়েছেন, মোটামুটি চার সপ্তাহের চিকিৎসায় ব্রণ সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হয়। চিকিৎসা চলাকালীন মুলেঠি, যষ্টিমধু, মুখক্রান্তি, ঘৃতকুমারী, চন্দনসহ নানা ভেষজ উপাদানও রোগীর মুখে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।
জানা গেছে, শুধু ব্রণই নয়, জোঁকের সাহায্যে এই হাসাপাতালে সারানো হচ্ছে টাকের সমস্যাও। এর জন্য প্রথমে জোঁকগুলিকে হলুদ ঘোলা পানিতে ছেড়ে রাখা হয়। এতেকরে জোঁকের রক্তশোষণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তারপর রোগীর মাথার চুল কামিয়ে ফেলে টাকপড়া অংশে ছেড়ে দেওয়া হয় জোঁকদের। জোঁক তখন সেই অংশের দূষিত রক্ত শুষে নেয়, তাতে চুল ওঠার উপযোগী নিউট্রিশন সঞ্চারিত হয়। যে কারণে নতুন করে চুল গজায়।
এই অভিনব চিকিৎসাপদ্ধতির সুবিধা নিতে হাসপাতালে প্রতিদিন বহু মানুষ ভিড় করছেন। রোগীরা বলছেন, চিকিৎসায় নাকি বেশ উপকারও তারা পাচ্ছেন। তবে জোঁক দেখে ভয় লাগছে কি না? এমন প্রশ্নে রোগীরা জানিয়েছেন, জোঁক যে কখন তাঁদের রক্ত চুষে খাচ্ছে তা নাকি বুঝতেই পারছেন না তারা! ‘প্রকৃতপক্ষে জোঁকের মুখে এক ধরনের এনজাইম থাকে। তার সাহায্যে কোনও প্রাণীর রক্ত শোষণের সময় সংশ্লিষ্ট অংশটি অবশ করে দেয় তারা। তাদের শিকার যাকে করা হয় সে কিছুই টের পায় না;’ এমনটিই জানিয়েছেন ওখানকার চিকিৎসকরা।