দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এখন যারা অভিনয় করেন তারা মোটামুটি সবাই স্বচ্ছল জীবন যাপন করেন। কিন্তু এক সময় যারা এই পেশায় ছিলেন তাদের অবস্থা বর্তমানে বড়ই করুন। যেমন বর্তমানে এক মানবেতরভাবে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন অভিনেত্রী নার্গিস।
অভিনেত্রী আনোয়ারার ছোট বোন হলেন নার্গিস। নার্গিসও ছিলেন সত্তর হতে নব্বই দশকের নায়িকাদের মধ্যে একজন। দীর্ঘদিন তার হাতে কোনো কাজ নেই। স্বামী মারা গেছে একযুগেরও বেশি সময় ধরে। মেয়ের বিয়ে হয়েছে অনেক দিন। ছেলের পড়াশোনা প্রায় বন্ধ। আয়ের কোনো লোক নেই নার্গিসের পরিবারে।
বেকারত্ব ও অসুস্থতা তাকে যেনো কাবু করে ফেলেছে। প্রায়ই উপোষ করে দিন কাটাতে হয় তাকে। এভাবেই চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন এক সময়ের এই অভিনেত্রী নার্গিসকে। কিডনি ও হার্টের জটিলতা সেইসঙ্গে রয়েছে বুকে টিউমার। চলচ্চিত্র বা নাটকের কেও কখনও খোঁজ-খবর নেন না তার। দু:স্থ, অসহায়, নিঃস্ব নার্গিস রামপুরার একটি ঝুপড়ি ঘরে এখন ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন।
সংবাদ মাধ্যমকে তিনি কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে বলেন,‘ আমার পাশে কেও নেই। অর্থের অভাবে নিজের চিকিৎসা আর ছেলেটির পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিও কোনোদিন আমার খোঁজ নেয় না।’
নার্গিস বলেছেন, ‘একমাত্র শিল্পী ঐক্যজোটের কর্মকর্তা ডি এ তায়েব ও জিএম সৈকত আমার খোঁজখবর রাখেন। তারা একা আমার জন্য আর কতইবা করবেন। আমার বোন আনোয়ারাও অনেক সাহায্য করেছেন।
ডি এ তায়েব ও জিএম সৈকত বলেন, চলচ্চিত্র ও টিভি সংগঠনগুলো যদি এগিয়ে আসে তাহলে এই জনপ্রিয় অভিনেত্রীর জীবন বেঁচে যায়। তিনি দুই শতাধিক টিভি নাটক ও প্রায় একশত ছবিতে অভিনয় করেছেন।’
উল্লেখ্য, কুমিল্লার মেয়ে হোসনে আরা নার্গিস ১৯৭০ সালে আমির হোসেনের ‘যে আগুনে পুড়ি’ ছবিতে শিশু শিল্পী হিসেবে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আগমন ঘটে। এরপর ১৯৭৩ সালে সিবি জামানের ‘ঝড়ের পাখী’ ছবিতে সহ-নায়িকা হয়ে অভিনয় করেন তিনি। শিবলী সাদিকের ‘নোলক’সহ অর্ধশতাধিক ছবিতে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান এক সময়ের এই নায়িকা। নব্বই দশকের শুরুতে হাফিজউদ্দিনের ‘অবদান’ ছবিতে সর্বশেষ অভিনয় করেন তিনি। আজ অসহায় হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এক সময়ের এই অভিনেত্রী নার্গিস।