দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো একই কৌশলে সাইবার হামলা হলো এক ভারতীয় ব্যাংকে। দেশটির এক সরকারি ব্যাংক হতে সস্প্রতি ১৭ কোটি ডলার চুরির ঘটনা ঘটেছে।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, সুইফট সিস্টেম ব্যবহার করে ৫টি দেশের ৫টি অ্যাকাউন্টে ওই অর্থ পাঠানো হয়েছে। তবে গ্রাহক অ্যাকাউন্ট হতে টাকা উত্তোলনের পূর্বেই ওই অর্থ ফেরত নিতে সক্ষম হয়েছে ভারত। সোমবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি সিস্টেমে ম্যালওয়ার প্রবেশ করিয়ে সুইফট সিস্টেমে অর্থ লেনদেনের তথ্য নকল করেই ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করতে সক্ষম হয় সাইবার হামলাকারীরা। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমের নিউইয়র্ক শাখায় একটি অ্যাকাউন্টে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের ওই অর্থ জমা করা হয়েছিল। ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ইউনিয়ন ব্যাংকেরও ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত অ্যাকাউন্ট হতে অর্থ স্থানান্তর করে নিয়েছে ওই হ্যাকাররা।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। আর ভারতের ইউনিয়ন ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয় জুলাইতে। বিষয়টি এতোদিন গোপন রেখেছিল ভারত। এছাড়া গতবছর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মেক্সিকো এবং পোলান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে সাইবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। সবগুলোর হামলার ধরণ ও প্রাপ্ত ম্যালওয়ারগুলো একই ধরনের। বাংলাদেশের হামলার পেছনে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকার গ্রুপ জড়িত বলে সাম্প্রতিক সময় প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ভারতের ইউনিয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান অরুন তিওয়ারীর বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ম্যালওয়ার প্রবেশ করিয়ে হ্যাকাররা সুইফট সিস্টেমে লেনদেনের কোড কপি করে ফেলে। পরবর্তীতে ওই কোড ব্যবহার করে ইউনিয়ন ব্যাংকের করেনপন্ডেন্ট নিউইয়র্কের সিটিগ্রুপ ব্যাংকের মাধ্যমে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের একটি অ্যাকাউন্টে রক্ষিত ১৭ কোটি ডলার ৫টি দেশের ৫টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়েছিলো।
ঘটনার টিক একদিন পর গত ২১ জুলাই সিটি গ্রুপের ব্যাংকের একটি নির্দেশনা পেয়ে এক কর্মকর্তা জানতে পারেন যে ৫টি পরিশোধ নির্দেশের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন হয়েছে। এরপর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়া অর্থ ফেরত আনে। এরপর ২৪ জুলাই হংকংয়ে যাওয়া অর্থ ফেরত আনতে সক্ষম হয় ভারতের ওই ইউনিয়ন ব্যাংক।
অরুন তিওয়ারী আরও বলেছেন, বাংলাদেশ এবং আমাদের ক্ষেত্রে একইভাবে ম্যালওয়ার সক্রিয় করে স্বয়ংক্রিয় লগইন চালু করে হ্যাকাররা। উভয়ক্ষেত্রে কর্মকর্তার ইমেইলের মাধ্যমে ম্যালওয়ার প্রবেশ করানো হয়। অর্থচুরি শেষে পুরো সিস্টেমকেই অকেজো করে রাখে হ্যাকাররা।
ভারত বিষয়টি গোপনেই ম্যানেজ করে যে কারণে আগে সংবাদপত্রে কোনো খবর আসেনি।