দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাড়ির মালিক হওয়া যায়, গাড়ির মালিক হওয়া যায়। তাই বলে চন্দ্র-সূর্যের মালিক হওয়া যায় তা কিন্তু আগে আমরা শুনিনি!
এমন একটি শিরোনাম দেখে অবাক হওয়ারই কথা। শুধু চাঁদ-সূর্য নয়, এর সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য সব গ্রহ, উপগ্রহ, ধূমকেতু, উল্কাসহ পুরো সৌরজগতেরই মালিকানা ছিল নাকি ডিন লিন্ডসের হাতে। চন্দ্র বিজয়েরও অনেক আগে সেই ১৯৩৭ সালের কথা। তখন নাকি এসবের মালিকানা নিয়েছিলেন তিনি। ওই সময় স্থানীয় আদালত তার সেই দাবি মেনেও নিয়েছিলেন!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, প্রথমে পিটসবার্গ নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে মহাকাশের মালিকানা চেয়ে আবেদন করেন ডিন লিন্ডসে। তিনি অবশ্য সে সময় পৃথিবীকে ছাড় দিয়েছিলেন। কারণ হিসেবে বলেছিলেন যে, যেহেতু পৃথিবীকে অনেক মানুষ নিজেদের বাসস্থান মনে করে থাকে, তাই এতে তিনি আর হাত বাড়াতে চান না! তবে এই সৌরজগতের অন্য সব গ্রহ এবং উপগ্রহের মালিকানা দাবি করেছিলেন তিনি। এসবের নামও দিয়েছিলেন ডিন লিন্ডসে, ‘এ.ডি.লিন্ডসের দ্বীপপুঞ্জ’। প্রথম আবেদনে শনি ও চাঁদের কথা উল্লেখ করেননি ডিন লিন্ডসে।
তবে এরপর এগুলোরও মালিকানা চেয়ে পৃথক পৃথক আবেদন করেন। তিনি শুধু এসব করেই ক্ষান্ত হননি। নিজের মালিকানা বৈধ করার জন্য ওই বছরের জুন মাসে জর্জিয়ার ওসিলা শহরের স্থানীয় আদালতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও পাঠান ডিন লিন্ডসে। এসব আবেদন দেখে আদালতের মুহুরি কী ভেবেছিলেন, এটি কী করে সম্ভব? তারপরও তিনি বিধি মোতাবেক সেই আবেদন নথিবদ্ধও করেছিলেন সংশ্লিষ্ট ওই কর্মকর্তা!
যদিও ১৯৬৭ সালে দূর মহাকাশ চুক্তি হওয়ার পর ডিন লিন্ডসের এই মালিকানা বাতিল হয়ে যায়। ওই চুক্তিতে বলা হয়, মহাকাশ সব জাতির জন্যই উন্মুক্ত থাকবে। কোনো দেশ এর ওপর কোনো অবস্থাতেই মালিকানা দাবি করতে পারবে না।
এই চুক্তি হওয়ার পরও হোপ নামের এক ব্যক্তি আবার মহাকাশের মালিকানা দাবি করেছিলেন। ১৯৮০ সালে এই সংক্রান্ত দাবি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র, তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের কাছে পাঠান। চাঁদ, ৮টি গ্রহ এবং সেগুলোর উপগ্রহের মালিকানা দাবি করেই শুধু বসে থাকেননি ডেনিস, সেখানকার জমিও বিক্রি করেছেন!
২০১৩ সালে তিনি জানান, এই পর্যন্ত চাঁদের ৬ হাজার ১১০ লাখ একর, মঙ্গলগ্রহের ৩ হাজার ২৫০ লাখ একর ও বুধ শুক্র গ্রহের মোট ১ হাজার ২৫০ লাখ একর জমি বিক্রি করেছেন তিনি!
হুজুগে পড়ে সৌরজগতের মালিকানা দাবি করলেও তা পেয়ে যাওয়ার পর ডিন লিন্ডসে অবাক হয়েছিলেন। বন্ধুকে লেখা এক চিঠিতে তিনি বলেন, ‘তুমি কি বিশ্বাস করতে পারছো? সূর্য, চাঁদ, গ্রহ, নক্ষত্র—এই সবকিছুর মালিকানা এখন আমার!’