দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রায় ৬৬ মিলয়ন বছর আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল ডাইনোসর। এই বিলুপ্তি নিয়ে সম্প্রতি গবেষণাকারীরা দিয়েছেন এক চমকপ্রদ তথ্য। এর উপর বিবিসির একটি ডকুমেন্টারি প্রকাশিত হতে যাচ্ছে অচিরেই।
গবেষকদের মতে, ৯ মাইল দীর্ঘ যে গ্রহাণুটির আঘাতের কারণে বিলুপ্ত হয় ডাইনোসররা, সেটি যদি এক মিনিটেরও কম সময়ের ব্যবধানে পৃথিবীতে আঘাত করতো তাহলে ডাইনোসর বিলুপ্ত হতো না।
গ্রহাণুটি আঘাত হানে মেক্সিকো উপসাগরে। এই আঘাতের ফলে বাষ্পীয় সালফারের ঘন মেঘ তৈরি হয়। মূলত এর কারণেই বিলুপ্তি ঘটে ডাইনোসরের। তবে যদি গ্রহাণুটির আঘাত হানার সময়ের সামান্য হেরফের ঘটতো তাহলে এটি আঘাত হানতো আটলান্টিক বা প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে। সেক্ষেত্রে উক্ত কারণে ডাইনোসরের অবলুপ্তির সম্ভাবনা তেমন থাকতো না।
উল্লিখিত মেঘের কারণে পৃথিবীতে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, এবং এর ফলে সারা পৃথিবী জুড়ে সৃষ্টি হয় প্রায় দশ বছর স্থায়ী “শীতকালের”। এই সময় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে নেমে যায়। গবেষক গ্যারোড বলেন, “আলো বাধা প্রাপ্ত হবার কারণে কয়েক দিনের মধ্যে তাপমাত্রা ৫০ ফারেনহাইট কমে আসে”
গ্রহাণুর আঘাতের জন্য সৃষ্ট মেঘের কারণে কয়েক বছরের মধ্যে পৃথিবীর বেশিরভাগ প্রাণী ও উদ্ভিদ মারা যায়। এ কারণে যেসব ডাইনোসর গ্রহাণুর আঘাতের পরপর মারা যায়নি সেগুলিও এক পর্যায়ে খাদ্যের অভাবে মারা পড়ে। ধারণা করা হয়, এই সময় পৃথিবীর জীব জগতের প্রায় চার ভাগের তিন ভাগ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল।
৪০,০০০ মাইল/ঘন্টায় ছুটে আসা গ্রহাণুটির সঞ্চিত শক্তির পরিমাণ ছিল প্রায় ১০ বিলিয়ন পারমাণবিক বোমার সমান। আঘাতের সাথে সাথে প্রায় ৬০০ মাইল এলাকা ধ্বংস হয়ে যায়। গবেষকরা আঘাতের স্থান থেকে ১৬০০ মাইল দূরেও এর প্রভাব পড়ার আলামত পেয়েছেন।
তবে গ্রহাণুর এই আঘাতে ডাইনোসরের বিলুপ্তি ঘটলেও পরবর্তীতে পৃথিবীতে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীর স্থায়ীত্বের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়।