দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রেমের বিষয়টি সত্যিই এক বিস্ময়ক জিনিস। প্রেমে পড়ার পর মানুষ তার বংশ ও প্রতিপত্তি সব কিছুই ভুলে যায়। আজ রয়েছে রাজ পরিবারের রাজকন্যার প্রেমে ধর্মান্তরিত এক ফুটবলারের গল্প!
আজকের এই কাহিনীটি মালয়েশিয়ার এক রাজপরিবারের। রাজ পরিবারের রাজকন্যার সঙ্গে প্রেমের পর অনন্য এক প্রেমের সফল পরিণতির গল্প। সেখানকার রাজকুমারী বিয়ে করলেন এক প্রাক্তন ডাচ ফুটবলারকে। স্বীকৃতিও পেলো তাদের প্রেম। এ যেনো এক রূপকথার গল্পের মতোই। সিনেমার পর্দায় বা গল্পের বইয়ের চমকপ্রদ এক প্রেম কাহিনীর মতোই।
অনেকটা ডিজনি ওয়ার্ল্ডের গল্পের মতোই শুরু, কোনো একমুহুর্তে রাজকুমারীকে দেখলেন এক ভিনদেশী। চোখ পড়তেই রাজকন্যার প্রেমে পড়ে গেলেন ওই তরুণ। এরপর নানা কাহিনীর পর জীবনের তরে আপন করে নিলেন তাকে।
গত সোমবার নেদারল্যান্ডের সাবেক ফুটবলার ডেনিস মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বিয়ে করেছেন মালয়েশিয়ার জোহারের সুলতানের একমাত্র কন্যা রাজকুমারী তুনকু তুন আমিনাহ সুলতান ইবরাহীমকে। বিয়ের পূর্বে ডেনিস ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
জোহারের সুলতান ইব্রাহিম ইবনি আলমারহুম সুলতান ইসকান্দার দেশটির অন্যতম প্রভাবশালী রাজপরিবারের সুলতান। দেশটির অন্যতম ধনী রাজাদের তিনি একজন। সেইসঙ্গে নিজস্ব এক সেনাবাহিনীও রয়েছে তার।
জানা যায়, এক ক্যাফেতে ৩১ বছর বয়েসী রাজকুমারী ও ২৮ বছর বয়েসী ডেনিস ভারবাসের মধ্যে প্রথম সাক্ষাৎ হয়। ডেনিস তখন সিঙ্গাপুরের এক ফুটবল দলের বিপনন ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর পূর্বে তিনি ছিলেন ইংলিশ প্রিমিয়ার ক্লাব আর্সেনালের ফুটবল খেলোয়াড়।
জানা গেছে, পরিচয়ের তিন বছরের মাথায় ২০১৫ সালে ধর্মান্তরিত হয়ে নতুন নাম ধারণ করেন। ধর্মান্তরিত হয়ে ডেনিস ভারবাস হয়ে যান ডেনিস মুহাম্মদ আবদুল্লাহ। এর দুই বছর পর রাজকীয় বেশেই আপন করে নিলেন রাজকন্যাকে। ঝাকঝমকপূর্ণ বিবাহ উৎসবে শুধুমাত্র রাজ পরিবারের নিকটজন, বন্ধুবান্ধব এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। আমস্টারডাম হতে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন ডেনিসের মা।
মালয়েশিয় ঐতিহ্য এবং রাজ পরিবারের রীতিতে এই বিবাহ উৎসব আয়োজিত হয়। মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণাঞ্চলীয় জোহরের শতাব্দী-পুরানো রীতি মতে কনেকে ২২.৫০ রিঙ্গিত (৪ ডলার) যৌতুক দেন তিনি। সেইসঙ্গে সুলতান, রাণী, সুলতানের ভাই এবং তার স্ত্রীর হাতে চুম্বন করেন সম্মানের প্রতীক হিসেবে। রাজ পরিবারের নিয়ম অনুযায়ী বর-কনে দুজনেই পরেছিলেন সাদা পোষাক। এই সময় কনেকে আংটি পরিয়ে দেন বর।
উল্লেখ্য, বিবাহ অনুষ্ঠানটি জোহরের রাজ প্রাসাদের সামনে বড় টিভি পর্দায় সরাসরি দেখানো হয়। সাধারণ মানুষও পরিবার-সন্তানসহ রাজ পরিবারের বিবাহ উৎসব দেখতে ভীড় করেন রাজ প্রাসাদের সামনে। যেনো এক আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেছিল এলাকাবাসী।