দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মিয়ানমারে রাখাইনে সেনা অভিযান শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। আবারও বাংলাদেশে ঢুকছে রোহিঙ্গারা। বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি নাফ নদীর অপর প্রান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সমাবেশ বাড়ানোর খবরে সীমান্তে টহল বাড়িয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আবারও অভিযান শুরু করেছে সেদেশের সেনাবাহিনী। রোহিঙ্গা নেতারা বলেছেন, রাখাইনে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি এবং সামরিক স্থাপনা বাড়ানো হয়েছে। গত কয়েকদিনে শত শত রোহিঙ্গা আবারও বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে বলে জানা গেছে।
রোহিঙ্গা নেতারা বলেছেন, কমপক্ষে ৫শ’ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে তাদের কঠিন যাত্রা শুরু করেছে। অনেকেই বলছেন, তারা নতুন করে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
গত বছর ২০১৬ সালের অক্টোবরে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাবিরোধী কঠোর অভিযান শুরু করে। সেনাবাহিনীর নিপীড়ন হতে বাঁচতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে।
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর রক্তাক্ত ওই অভিযানের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নির্মূলের চেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ। রাখাইন হতে পালিয়ে আসা আবু তইয়ুব নামে জনৈক রোহিঙ্গা সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, তিনি পরিবারের ৭ সদস্যসহ পালিয়ে এসেছেন। সেনাবাহিনী রাখাইনে তাদের বাড়ি-ঘর ভেঙে দিচ্ছে, যুবকদেরকে গ্রেফতার করছে।
দুই দেশের সীমান্তের নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পৌঁছেছেন তিনি। তইয়ুব আরও বলেন, ‘পরিবারের সদস্যসহ দ্রুত রাখাইন ছেড়েছি।’
বাংলাদেশের এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, দেশের পর্যটন জেলা কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্র এবং অস্থায়ী বসতিতে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। কক্সবাজারের সঙ্গে যুক্ত মিয়ানমারের রাখাইনের সীমান্ত।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, গত বছরের অক্টোবরে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর এই সংখ্যা আরও বাড়তে থাকে। ওই সময় অন্ততপক্ষে ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ধর্ষণ, হত্যা এবং রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করছেন বলে রোহিঙ্গা নেতাদের দাবি।
তবে এমন এক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি নাফ নদীর অপর প্রান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সমাবেশ বাড়ানোর খবরে সীমান্তে টহল বাড়িয়েছে।
অপরদিকে রাখাইনের নিরাপত্তা বজায় রাখার অজুহাতে সেখানে সেনাবাহিনীর কয়েকটি ব্যাটালিয়ন পৌঁছানোর ঘটনায় গত সপ্তাহে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়ানঘি লি।
উল্লেখ্য, বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমারের রাখাইনে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বসবাস করে আসছেন দীর্ঘ কয়েক প্রজন্ম ধরে। এই রোহিঙ্গাদেরকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সেদেশের নাগরিকত্ব না দিয়ে; উপেক্ষিত হচ্ছে তাদের মৌলিক মানবিক অধিকার।