দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এইচআইভি নিয়ে আগ্রহ সবার রয়েছে। কারণ হলো এটি এমন একটি মারণ ব্যধি যার চিকিৎসা এখনও বিশ্বে পুরোপুরিভাবে আসেনি। তাছাড়া সংক্রমণের পদ্ধতিটিও একটু ব্যতিক্রমি। তবে এই মারণ ব্যধিটি নির্ণয়ে এবার সহজ একটি পদ্ধতি এসেছে। এবার এইচআইভি নির্ণয় হবে স্মার্টফোনেই!
এমন এক সময় ছিলো যখন এইচআইভি নিয়ে মানুষের মধ্যে কত রকমের ভয় ছিলো। সেটা পরীক্ষা করতে গিয়েও পড়তে হতো নানা ধরনের বিড়ম্বনায়। তবে এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে কাজ করে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। এইচআইভি পরীক্ষার জন্য তারা আবিষ্কার করেছেন এক ধরনের স্মার্টফোন।
এই স্মার্টফোনের মাধ্যমে মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যেই যাচাই করে নেওয়া যাবে আপনি এইচআইভি আক্রান্ত কিনা। প্রচলিত পদ্ধতিতে এইচআইভি পরীক্ষা করতে অন্তত ৭২ ঘণ্টা সময় নষ্ট করতে হয়। এখন থেকে আর এতো সময় জটিল পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে না।
চিকিৎসকদের এই স্মার্টফোনের মাধ্যমে ফলাফল পাওয়া এইচআইভি রোগীদের খুঁজে বের করে চিকিৎসা করাতে বিশেষ সাহায্য করবে। তাছাড়া এইচআইভি রোগিদের সঙ্গে মেলামেশ করা থেকেও দূরে থাকা সম্ভব হবে। কারণ হলো আগে না জানার কারণে অনেক সময় ঘটে যেতো বিপত্তি।
ইংল্যান্ডের গবেষক দলের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যে তত্ত্বে ভর করে এইচআইভি টেস্ট করা সম্ভব হয়েছে, সেটি ব্যবহার করে জিকা, ইবোলার মতো ভাইরাসের সন্ধানও করা সম্ভব হতে পারে।
গোটা প্রক্রিয়াটিকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয়, ‘সারফেস অ্যাকোস্টিক ওয়েভ’ বায়েচিপ। এটি মাইক্রোইলেক্টনিক যৌগ দিয়ে তৈরি বায়োচিপ যেটি মূলত স্মার্টফোনে ভরা থাকছে। এরসঙ্গে থাকছে একটি কন্ট্রোল বক্স যেটি সিগন্যালের মাধ্যমে ফলাফল জানিয়ে দেবে।
বায়োচিপ অনেকটা ইউএসবি ড্রাইভের মতোই; যেটি স্মার্টফোনে ভরা থাকবে। গবেষকরা জানিয়েছেন, ইউএসবি ড্রাইভের স্টিকের ওপর একটা স্থান চিহ্নিত করা থাকবে। তখন খুব সামান্য মাত্রায় তার ওপর রক্ত ফেলতে হবে। রক্তে এইডস ভাইরাস থাকলে বা তার মাত্রা বেড়ে গেলে তখন ওই যন্ত্রটির স্টিকে লাগানো এসিডের রং সম্পূর্ণ বদলে যাবে, এসিডের কিছু গুণাগুণও বদলে যাবে।
জানানো হয়েছে, ওই রাসায়নিক বিক্রিয়া হতে যে শক্তি উৎপন্ন হবে, তার একটা অংশ বিদ্যুৎশক্তিতেও রূপ নেবে। যে কারণে সৃষ্টি হবে ইলেকট্রিক সিগন্যাল। অনেকটা ‘ইলেকট্রিক্যাল স্পার্ক’-এর মতোই। ইউএসবি ড্রাইভের স্টিকের মাধ্যমে সেই স্পার্ক স্মার্টফোনের স্ক্রিণে পরীক্ষার ফলাফল ফুটিয়ে তুলবে। এই পদ্ধতিতে এইচআইভি পরীক্ষায় যথার্থতার (অ্যাকিউরেসি) মাত্রা হলো ৯৫ শতাংশ।
গবেষকরা জানিয়েছেন, আগে হতে এইচআইভি ধরা পড়লে আয়ু অন্তত ১০ বছর বেড়ে যাবে। সেইসঙ্গে গর্ভবতী মহিলাদের সন্তানদেরও নিরাপদ রাখার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হয়। নতুন পদ্ধতি ফলপ্রসূ হলে সারাবিশ্বে লক্ষ কোটি মানুষের প্রভূত উপকার সাধিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।