দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানব সভ্যতায় এমন কিছু রোগ রয়েছে যেগুলো বলা যায় ভয়ংকর। এমনই একটি চর্ম রোগে আক্রান্ত হয়েছে বগুড়ার এক কিশোর। ৬ মাস পর পর সাপের মতোই শরীরের চামড়া বদলায় নাফিজ নামে এই কিশোরের!
বিরল রোগে আক্রান্ত বগুড়ার এই শিশু নাফিজ আবু তালহার (৭) শরীরে চামড়া প্রতি ৬ মাস অন্তর সাপের মতোই বদলায়। সন্তানের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন নাফিজের বাবা।
জানা গেছে, জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পিরব ইউনিয়নের নড়াইল দায়মুল্ল্যা গ্রামের কৃষক নুর নবীর ছেলে আবু তালহা নাফিজ (৭) এর জন্মের ৪ দিন পরই শরীরের পুরো চামড়া উঠে যেতে থাকে। সেই হতেই সাপের চামড়ার ন্যায় প্রতি ৬ মাস অন্তর অন্তর চামড়াগুলো উঠে গিয়ে নতুন চামড়া ওঠে।
নাফিজের বয়সী ছেলে-মেয়েরা আনন্দ-উল্লাসে মেতে থাকলেও সমবয়সী নাফিজ যেনো এক বিষণ্ণতায় পড়ে থাকে বাড়ির আঙ্গিনায়। খেলা তো দূরে কথা তার সঙ্গে মিশতে পর্যন্তও ভয় পায় সমবয়সী শিশুরা। ঠিকমতো চলাফেরা করতে না পারলেও বাবা-মা এবং আশেপাশের মানুষের কথা-বার্তা ঠিকই বুঝতে পারে নাফিজ। স্বাভাবিক শিশুদের হতে পৃথক হয়ে উঠা নাফিচের পরিবার নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করছেন তাদের সন্তানের চিকিৎসা করার জন্য। তবে বিধি বাম! কৃষক নুর নবীর সাধ্য না থাকায় চিকিৎসা করে রোগমুক্ত তো দূরে থাক, রোগ নির্ণয়ই করতে পারেননি চিকিৎসকরা।
বেশ কয়েক বার স্থানীয় চিকিৎসকসহ ঢাকায় নিয়ে গিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি চিকিৎসার। বর্তমানে নিঃসপ্রায় অবস্থায় নাফিজের বাবা অনেকটায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এই প্রতিবেদককে জানান, “হামার সবকিছু দিয়ে ছোলডার চিকিৎসার করুম। কিন্তু ডাক্তররা বুজেই পারেনা হামার ছোলের কি হছে। বড় বড় ডাক্তরের কাছে নিয়ে যাওয়ার মতো ক্ষমতাও হামার নাই। তাই আল্লাহ’র কাছে ছাড়ে দিছি।”
নাফিজের বাবা জানিয়েছেন, তাদের ঘরের একমাত্র আদরের সন্তানকে নিয়ে অনেক আশা- আকাঙ্ক্ষা থাকলেও বর্তমানে সেটি যেনো স্বপ্নের মতো। বর্তমান সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এই শিশুর বাবা। তিনি বলেছেন, ওনারা যদি আমার ছেলে চিকিৎসা করে ভালো করে দেন, তাহলে তাদের প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ রইবো।
এদিকে বিরল এই রোগ সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সল্লিমুল্ল্যাহ্ আকন্দের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি জানান, ‘এখন পর্যন্ত এরকম কোনো ঘটনা আমি জানিনা। কোনো ব্যক্তি যদি এরকম রোগে আক্রান্ত হয়ে আমাদের কাছে আসে তাহলে অবশ্যই আমরা সঠিক চিকিৎসা করবো ও প্রয়োজনে ঢাকা প্লাষ্টিক এন্ড বার্ণে পাঠানোর ব্যবস্থা করবো।’