দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মৃত্যুর পর পেরিয়ে গেছে ২৪১৫ বছর। এই দীর্ঘ সময় পর আদালতের রায় দিয়েছেন যে সক্রেটিস নির্দোষ! তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিলো যে, তিনি তরুণদের ভুলপথে চালিত করেছেন, ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়েছেন ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়েছেন।
তরুণদের ভুলপথে চালিত করা, ধর্মের অপব্যাখ্যা ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার মতো অভিযোগ আনা হয়েছিল সক্রেটিসের বিরুদ্ধে। কিন্তু ২৪১৫ বছর পর প্রমাণ হলো তিনি আসলে ছিলেন নির্দোষ।
আমরা দেখেছি অনেকেই বছরের পর বছর জেল খাটার পর বেকসুর খালাস পান। আবার ফাঁসি দিয়ে মৃত্যুদণ্ডের পরেও অপরাধী প্রকৃত দোষী ছিলো কি না, বিষয়টি নিয়ে তর্ক চলতেই থাকে। তবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার প্রায় ২৪১৫ বছর পর কেও যদি নির্দোষ প্রমাণিত হন? তাহলে চমকে উঠায় স্বাভাবিক ঘটনা! এবার সেই চমক সৃষ্টি রায়ের কথা শোনা গেলো। মৃত্যুদণ্ডের ২৪১৫ বছর পর গ্রিসের একটি আদালত রায় দিলো যে, সক্রেটিস নির্দোষ ছিলেন।
সক্রেটিস এমনই এক দার্শনিক চিন্তাধারার জন্ম দিয়েছিলেন যে, যা দীর্ঘ ২ হাজার বছর ধরে পশ্চিমা সংস্কৃতি, দর্শন এবং সভ্যতাকে প্রভাবিত করেছে। তবে প্রাচীন গ্রিসের শাসকরা সক্রেটিসের তত্ত্বগুলিকে কখনও মানতে চাননি। আর সে কারণেই এই গণ্ডগোল।
সক্রেটিস এথেন্সের তৎকালীন আরাধ্য দেবতাদের নিয়ে প্রকাশ্যেই প্রশ্ন তোলেন । তাঁর বিরুদ্ধে অত্যাচারী শাসকদের সমর্থনেরও অভিযোগ আনা হয়।
যদিও বলা হয়েছে যে, সক্রেটিস নির্দোষ হলেও মুখ বুজে বিচারকদের রায় মেনে নিয়েছিলেন। মৃত্যুর পূর্বে পালানোর সুযোগ পেলেও এথেন্স ছেড়ে যাননি সক্রেটিস।
তরুণদের বিপথে নিয়ে যাওয়া, নতুন দেবদেবীদের সম্পর্কে প্রচার করাসহ সক্রেটিসের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর স্বপক্ষে আদালতে কোনও যুক্তিগ্রাহ্য প্রমাণ বিচারপর্বে তুলে ধরা যায়নি বলে অভিযোগ ওঠে।
হেমলক বিষপান করে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ মাথা পেতে মেনে নিয়েছিলেন সক্রেটিস। তিনি আসলেও দোষী ছিলেন কি না, সেই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার জন্য এথেন্সের ওনাসিস ফাউন্ডেশনের একটি আদালতে আবার নতুন করে বিচারব্যবস্থার আয়োজন করা হয়। সেই বিচারেই সক্রেটিসকে সম্পূর্ণ নির্দোষ বলে রায় দিলেন ওই আদালত।
সক্রেটিসের সমর্থনে তাঁর আইনজীবী বলেছেন, ‘‘কোনো ব্যক্তির অভিমত কখনও অপরাধ হতে পারে না। সক্রেটিস সব সময় সত্যের সন্ধান করতেন। আর তা করতে গিয়ে তিনি তাঁর নিজস্ব মত তুলে ধরতেন। তবে আমার মক্কেলের একটাই দোষ ছিলো, তিনি উস্কানিমূলক কথা বলে মানুষকে খ্যাপাতেন। সবসময় বাঁকা বাঁকা কথা বলতেন তিনি। যেমন তিনি বলতেন, ‘দেখাও তোমাদের গণতন্ত্র কতোটুকু খাঁটি ও বিশ্বাসযোগ্য’ ইত্যাদি ইত্যাদি।’’ সক্রেটিসের সমর্থনে তাঁর আইনজীবী আরও বলেন যে, সাধারণ মামলাকে জটিল করার জন্য মৃত্যুদণ্ডের মতো শাস্তি দেওয়াটা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না।’’
সক্রেটিসের পক্ষ নিয়ে এই মামলায় ফ্রান্সের এই বিখ্যাত আইনজীবী সওয়াল করেন। উল্টোদিকে গ্রিসসহ বেশ কয়েকটি দেশের আইনজীবীরা সক্রেটিসের বিরোধিতাও করেন। এই মামলার বিচারের জন্য আমেরিকা এবং ইউরোপীয় বিচারকদের সমন্বয়ে একটি প্যানেল তৈরি করা হয়। দীর্ঘ বাদানুবাদের পর সক্রেটিসের আইনজীবীর যুক্তিতেই নির্দোষের পক্ষে সিলমোহর দেন বিচারকরা।
উল্লেখ্য, গত বছর নিউইয়র্কের একটি আদালতেও সক্রেটিস নির্দোষ প্রমাণিত হন।
This post was last modified on নভেম্বর ৬, ২০১৭ 10:03 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্রণ বিষয়ে চিকিৎসকরা মনে করেন, অ্যাডাল্ট অ্যাকনির নেপথ্যে মূল কারণ…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সেরা প্রযুক্তি আও উদ্ভাবনের জোরে বিনোদনের সংজ্ঞাকে প্রতিনিয়ত পাল্টে দিচ্ছে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভিটামিন বি১২ শরীরের কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজ পরিচালনা করে। তাই এই…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ (সোমবার) আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলা সিনেমার কিংবদন্তী…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গত ৩ দিনে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভিডিও ভাইরাল করতে গিয়ে এক যুবক দেশলাই জ্বালিয়ে পেট্রোলের উপর…