দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সত্যিই আজব এক কথা। হাটে নাকি বিক্রি করা হয় প্রেমের স্মৃতি! যুগে যুগে মানব সভ্যতায় প্রেম, ভালোবাসা সত্যিই এক রোমাঞ্চকর একটি বিষয় ছাড়া কিছু নয়। তবে হাটে বিক্রি হওয়ার বিষয়টি এবারই প্রথম।
প্রেমে পড়ে এর অন্তর্দাহে পুড়ছেন এমন মানুষের সংখ্যা কিন্তু জগৎ সংসারে একেবারে কম নয়। এর কারণ হলো প্রিয় মানুষটির সঙ্গে জড়িয়ে থাকে হাজারও স্মৃতি। অনেকেই আবার সে স্মৃতিকে পুঁজি করে বেঁচে থাকেন সারা জীবন- এমন নজির অনেক রয়েছে। তাই এবার শোনা গেলো প্রেমের স্মৃতি হাট খুলে বসেছে! এতে কিন্তু অবাক হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, এমনই এক ব্যতিক্রমি হাটের সন্ধান পাওয়া গেছে ভিয়েতনামে। সেখানকার ওল্ড ফ্লেমস মার্কেটে সারি সারি পুরাতন পণ্যের পসরা সাজিয়ে মলিন মুখে বসে রয়েছেন কিছু যুবক-যুবতী। দামি জামা, জুতা, ঘড়ি, সুগন্ধী হতে শুরু করে সস্তা চাবির রিংও স্থান পেয়েছে এখানে। তবে বাজারের আর দশটা পুরাতন পণ্যের বাজার হতে এই বাজারের পণ্য সামগ্রী ও বিক্রেতার মাঝে বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান। এখানে সারি সারি সাজানো যে পণ্যের দেখা পাওয়া যাচ্ছে তার প্রত্যেকটিই পুরাতন প্রেমিক-প্রেমিকার কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া জিনিসপত্র!এই হাটের বিক্রেতারা প্রত্যেকই সেইসব পুরাতন প্রেমিক বা প্রেমিকা।
ডিং থ্যাং নামের এক জনৈক ব্যক্তি একেবারে ভিন্নধর্মী এই বাজারটির মূল উদ্যোক্তা। তিনি মনে করেন, প্রেম ও উপহার একে অন্যের সঙ্গে পরিপূরক। প্রেমিকার কাছ থেকে উপহার পায়নি এমন প্রেমিক খুঁজে পাওয়া প্রায় দুস্কর। তবে প্রেম ভেঙ্গে গেলে এই উপহারের কোনো দাম থাকে না, তখন চোখের কাঁটায় পরিণত হয়। আবার এইগুলো ফেলে দিলেও পরিবেশ নোংরা হয় অনেক সময়। তাছাড়া প্রত্যেকটি জিনিসের ব্যবহারিক মূল্যও রয়েছে।
জানা যায়, ডিং থ্যাং নিজেও প্রেম করে ব্যর্থ হয়েছেন। যে কারণে অন্য ব্যর্থ প্রেমিক-প্রেমিকার কষ্টটা খুব সহজেই বুঝতে পারেন তিনি। তাই অন্যদের কষ্ট লাঘবের জন্যই তার এই প্রচেষ্টা।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে চালু হওয়া এই বাজার ভিয়েতনামে এখন চরম আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বেচাকেনাও একেবারে মন্দ নয়। তাই আগামীবছর ভিয়েতনামের হো চি মিন শহর এই বাজার সম্প্রসারণের পরিকল্পনাও রয়েছে ডিং থ্যাংয়ের।
তবে অনেকের মাঝে মধ্যে ফেললেও বেশ কিছু মানুষ এই বাজারের সমালোচনাও করছেন। তারা এটাকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন হিসেবেই দেখছেন। তবে এসব সমালোচনা গায়ে মাখছেন না উদ্যোক্তা ডিং থ্যাং।
ডিং থ্যাং জানান, পুরাতন প্রেমিকার কাছ থেকে পাওয়া জিনিস স্মারক হিসেবে জমিয়ে রাখা মোটেও সুখকর কোনো বিষয় হতে পারে না। যে কারণে এই বাজারে প্রেমিকরা পুরাতন প্রেমিকার কাছ থেকে পাওয়া উপহার বিক্রি করে যেমন মনের কষ্ট লাগব করতে পারছেন ঠিক তেমনি অনেক নতুন প্রেমিক তাদের প্রেমিকার জন্য এখান থেকে পছন্দসই জিনিসপত্র সংগ্রহও করতে পারছেন। তিনি মনে করেন প্রেম মানুষের জীবনেরই একটি অঙ্গ। তাই এটিকে ছোট করে দেখার কোনো কারণ নেই।