দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্মরণকালের জঘণ্যতম পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার দায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদন্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া মোট ১৮৫ জনকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন।
তাছাড়াও ১৯৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে খালাস পেয়েছেন ৪৯ জন। আজ (সোমবার) বিচারপতি মো. শোকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই রায় দিয়েছেন। বেঞ্চের অপর দুই বিচারপতি হলেন মো. আবু জাফর সিদ্দিকী এবং মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার।
আদালত আজকের এই রায়কে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেছেন। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়ানোর জন্য রায়ে বিভিন্ন সুপারিশও করা হয়েছে। আজকের হাইকোর্টের এই রায়ের মধ্যদিয়ে মামলাটির বিচারপ্রক্রিয়ার দুটি ধাপ শেষ হলো।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহের নামে পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে ঘটেছিল স্মরণকালের এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড। এই ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে প্রাণ দিতে হয়। ওই ঘটনার পর বিচারের মুখোমুখি করা হয় ৮৪৬ বিডিআর জওয়ানকে। মামলার অন্য চার আসামি বিচার চলাকালেই মারা যান। আসামির সংখ্যার দিক হতে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ হত্যা মামলা।
বিচারিক আদালত ২০১৩ সালের ৬ নভেম্বর এই মামলায় ১৫২ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুর আদেশ দেন । এদের একজন ছাড়া বাকি সবাই তৎকালীন বিডিআরের সদস্য। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় ১৬ জনকে। সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পান আরও ২৫৬ জন আসামী। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পান ২৭৮ জন। মোট সাজা হয় ৫৬৮ জনের।
হাইকোর্টে কোনো রায় পড়তে দুদিন সময় লাগার বিয়ষটি অনেক আইনজীবী নজিরবিহীন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এই মামলায় আদালত ১ হাজার পৃষ্ঠারও বেশি পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। সম্পূর্ণ রায় হলো প্রায় ১০ হাজার পৃষ্ঠার।
আদালত তার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন যে, তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহে অভ্যন্তরীণ এবং বাইরের ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। আদালত বলেছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করে গণতন্ত্র ধ্বংস করাই ছিল বিদ্রোহের অন্যতম এবং মূল উদ্দেশ্য।