দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষ যখন খুব উত্তেজিত হয়ে পড়েন তখন তার মাথার ঠিক থাকে না। ক্ষোভে-রাগে যেনো দিক-বিদিক ছুটাছুটি করতে থাকেন। এমনই এক পরিস্থিতিতে এক ব্যক্তি তার ক্ষোভ মেটাতে গিয়ে ৬ হাজার চাকা ফুটো করলেন!
তবে ক্ষোভে ওই ব্যক্তি এক দিন দুই দিন নয়, দীর্ঘ ৬ বছর ধরে এই কাজটি করছেন তিনি। যখন তিনি যেখানে সুযোগ পান, দাঁড় করিয়ে রাখা গাড়ির চাকা পাংচার কিংবা ফুটো করে দেন। তারপরই আবার দৌড়ে পালিয়ে যান তিনি। কেমন অসুবিধায় পড়তেন গাড়ির মালিকদের একবার ভাবুন? তার বিরুদ্ধে বহুদিন ধরেই অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ তাকে খুঁজছিল দীর্ঘদিন ধরেই। অবশেষে হাতেনাতে ধরা পড়লেন ওই ব্যক্তি। তবে পুলিশের কাছে জবানবন্দীতে তিনি যে তথ্য দিয়েছেন তা শুনে রীতিমতো পুলিশও অবাক হয়েছে। এই ব্যক্তি মোট ৬ হাজার গাড়ি ফুটো করেছেন!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ফ্রান্সের বরদোঁ শহরে গ্রেফতার হওয়া ওই ব্যক্তির বয়স ৪৫ বছর। অবশ্য তার নাম প্রকাশ করা হয়নি। সম্প্রতি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন যে, সমাজের প্রতি ক্ষোভ এবং রাগ মেটাতে গাড়ির চাকা পাংচার করে আসছেন তিনি।
ওই ব্যক্তিকে সংবাদমাধ্যমে ‘সিরিয়াল পাংচারার’ নামে অভিহিত করা হয়েছে। তিনি নিজেই নাকি নিজেকে এই নামে ডাকার অনুরোধও করেছেন। ওই ব্যক্তি এ যাবতকাল সব সময়ই পুলিশকে এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন যে, ২০১৪ সাল হতে তাকে খোঁজা হচ্ছিল। তাকে গ্রেফতারের কারণে বরদোঁ শহরের মানুষ যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচলেন!
গ্রেফতার হওয়ার পর ওই ব্যক্তি বলেছেন, ২০১১ সাল হতে প্রতি রাতে গড়ে বিভিন্ন গাড়ির ৭০টি চাকা ফুটো করেছেন তিনি। পুলিশের হিসাবে এখন পর্যন্ত ৬ হাজার গাড়ির চাকা পাংচার করেছেন ওই ব্যক্তি।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো ওই ব্যক্তি এতোই চতুর ছিলেন যে, চাকা পাংচার হওয়ার জায়গায় কোনো ডিএনএ চিহ্ন পর্যন্ত পাওয়া যেতো না। তাছাড়া ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজেও ধরা দিতেন না কখনও। অনেক সময় এতো নিখুঁতভাবে চাকা ফুটো করতেন যে, বোঝাই যেতো না চাকায় হাওয়া নেই! কিছুদূর চালানোর পর গাড়ির চালক বুঝতে পারতেন, চাকায় কিছু একটা হয়েছে।
বরদোঁ শহরের সরকারি আইনজীবী মেরি-ম্যাডেলিন অ্যালিয়ট বলেছেন, ‘এটি আসলে প্রাণখুলে হাসার মতো একটি ঘটনামাত্র।’ তবে এই কথাটি শুনলে বন্দর শহরটির অধিবাসীরা হয়তো রাগ করতে পারেন। কারণ গাড়ির চাকা ফুটো করার ঘটনায় দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে গত ৬ বছরে পুলিশের কাছে অন্তত ১ হাজার ১০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে।
ওইসব অভিযোগ বিবেচনায় নিয়ে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে বিচারপ্রক্রিয়াও ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। আগামী মাসে এসব মামলার শুনানি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।