দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘দিল্লি জামে মসজিদ ছিল যমুনা দেবির মন্দির’ বলে দাবি করেছেন এক বিজেপি নেতা। ইতিপূর্বে বাবরী মসজিদ নিয়েও এমনই ঘটনা ঘটেছিল।
বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে বিজেপি নেতা বিনয় কাটিয়ার দুর্নাম আজকের নয়, উত্তর প্রদেশের রাজ্যসভার সদস্য বিনয় উত্তপ্ত এবং ধর্মীয় উস্কানিমূলক বক্তব্যের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।
সম্প্রতি দিল্লি জামে মসজিদের স্থানে পূর্বে যমুনা দেবির মন্দির ছিল এমন মন্তব্য করে তিনি যেনো ভিমরুলের চাকেই ঢিল মারলেন।
বিনয় কাটিয়ার দাবি হলো, ভারতে প্রায় ৬ হাজার স্থান রয়েছে যেগুলো মোঘল শাসকদের দ্বারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। দিল্লি জামে মসজিদ মূলত যমুনা দেবির মন্দির ছিল, তাজমহল যেমন ছিল তেজো মহালয়ার। দেশটির একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এই দাবি করেন বিনয়।
ইতিপূর্বেও ভারতের বেশ কিছু আইনপ্রণেতা মুসলমানদের জন্য তাৎপর্যপূণ স্থাপনায় পূর্বে হিন্দুদের পবিত্র স্থাপনা ছিল এমন মন্তব্য করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়েছিলেন- এটিও তারই একটি অংশ।
বিনয় কাটিয়ার সর্বশেষ মন্তব্য যেনো সে পালেই হাওয়া দিয়েছে। বিশেষ করে বাবরি মসজিদ ধ্বংসযজ্ঞের ২৫ বছর পূর্তির পরদিনই এমন মন্তব্য নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমেও ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে।
ভারতের রাজনীতিবিদদের একটি অংশ বরাবরই মুসলিম শাসকদের দ্বারা হিন্দুরা লুণ্ঠনের শিকার হয়েছিল দাবি করে আসছে। তারা বিভিন্ন সময় দখলকৃত বিভিন্ন স্থাপনা উদ্ধারের কথাও বলে আসছে। বিনয়ে মন্তব্য এর সর্বশেষ সংযোজন বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বিশ্বের অন্যতম ঐতিহাসিক মসজিদ দিল্লি জামে মসজিদ। ষোল শতাব্দীর প্রথম দিকে ভারতে এই ঐতিহাসিক মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল; যা বর্তমানে দিল্লি শাহী জামে মসজিদ নামে পরিচিত।
সেই সময় ১০ লাখ রুপি ব্যয় করে মুঘল সম্রাট শাহজাহান নির্মাণ করেছিলেন দিল্লির এই জামে মসজিদটি। প্রায় ৫শ’ বছরের পুরোনো ভারতের সবচেয়ে বড় এই মজসিদ দেশটির অন্যতম প্রধান ঐতিহ্যের ধারক-বাহক।
এই মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৬৪৪ সালে। ৫ হাজার কর্মী নির্মাণ কাজে নিযুক্ত ছিলেন। ১২ বছর পরে ১৬৫৬ সালে মসজিদ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়। ওই বছরের জুলাই মাসের ২৩ তারিখে মসজিদটি উদ্বোধন করা হয়। মসজিদটি উদ্বোধন করেন ইসলাম ধর্মের একজন সাধক ইমাম বুখারি (র.)। ইমাম বুখারির বাড়ি ছিলো ইজবেকিস্তানের বুখারায়। তার প্রকৃত নাম সৈয়দ আব্দুল গফুর শাহ বুখারি (র.)।