২২ গজের ইয়ার্ডে নিজের কতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেই ফেলেছিলেন মালিঙ্গা, লো স্কোরিং ম্যাচে থ্রিলার এনে দিয়েছিলেন তিনি। তবে নিউজিল্যান্ড মালিঙ্গা রহস্যকে জয় করে গত চার বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো লঙ্কার বিরুদ্ধে ওয়ানডে ম্যাচ জিতে নেয়। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি’র প্রথম ম্যাচ বাদ দিলে বাকীসবগুলো ম্যাচে বোলারদের আধিপাত্য লক্ষ্য করা গেছে। কিউই বোলারদের দাপটেই ১৩৮ রানে অল-আউট হয়ে যায় লঙ্কানরা। তবে রান তাড়া করতে নেমে পাল্টা বোলিং আক্রমণের শিকার হয় কিউইরাও, তবু ১ উইকেটের ঘাম ঝরানো জয় বের করে নেয় তারা। ৯ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৩৯ রান।
টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে বাজেভাবে শুরু হয় লঙ্কান ইনিংস। ০ রানে মিলসের বলে আউট হয়ে ফিরে যান পেরেইরা। সেটাই শুরু, এরপর ব্যাটিংয়ে আর কখনোই ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। গড়ে তুলতে পারেনি কোন বড় কিংবা ছোটো জুটি। সবচেয়ে বড় জুটিটি এসেছে সপ্তম উইকেটে। সাঙ্গাকারা-থিরিমান্নে ৩৬ রান যোগ করেন। দলীয় ১১৮ রানে থিরিমান্নে আউট হন ২৯ বলে ১৫ রান করে।
কাইল মিলস, নাথান ম্যাককালাম, ম্যাকক্লেনাঘানের পেস বোলিংয়ের সামনে দিশেহারা হয়ে পড়ে তারা। একপাশে একা হাতে লড়াই করছিলেন কুমার সাঙ্গাকারা। ৮৭ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলে দলীয় ১৩৫ রানে তিনি আউট হন অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান এসেছে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান দিলশানের ব্যাট থেকে। তিনি ১৮ বলে ২০ রান করেন। ৩৭.৫ ওভারে ১৩৮ রানে অল আউট হয়ে যায় ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কা। তখনও অবশ্য কেউ বুঝতে পারেনি ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে কতোটা উত্তেজনা অপেক্ষা করছে!
কাইল মিলস, নাথান ম্যাককালাম ২টি করে উইকেট এবং ম্যাকক্লেনাঘান ৪টি উইকেট লাভ করেন। জয়াবর্ধনের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি তুলে নেন ড্যানিয়েল ভেট্টরি।
রান টার্গেট মাত্র ১৩৮, ম্যাচ জয় অনেকটা নিশ্চিত, হয়তো এমনটা ভেবে ব্যাট হাতে নেমেছিলো নিউজিল্যান্ড। কিন্তু বাস্তবতা বদলে লঙ্কান বোলিং কিউইদের সামনে বিভীষিকা নিয়ে আসে। অষ্টম ওভার পর্যন্ত কিউদের স্কোরবোর্ডে ছিলো ১ উইকেটে ৪৮ রান, সেখান থেকে মালিঙ্গা, হেরাথ এবং দিলশানের ত্রিমুখী আক্রমণে দশম ওভারে কিউদের চেহারা দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৪৯ রান। এসময় প্রায় সেট হয়ে যাওয়া গাপটিল (২৪) এবং উইলয়ামসনকে (১৬) ফেরায় লঙ্কানরা। দলীয় ৮০ রানে যখন ভেট্টরির ষষ্ঠ উইকেটটি মালিঙ্গা লাভ করেন, সেখান থেকে সপ্তম উইকেট জুটিতে ৩৫ রানের জুটি গড়ে দলকে মোটামুটি সামাল দেয়ার চেষ্টা করে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম এবং নাথান ম্যাককালাম।
কিন্তু এসময়ই লঙ্কানদের বড় একটা ব্রেকথ্রু দেন মালিঙ্গা। দলীয় ১১৫ রানে ৪৯ বলে ১৮ রান করে ব্রেন্ডনের সপ্তম উইকেটের পতন ঘটলে ম্যাচে উত্তেজনা চলে আসে। ১২২ রানের মাথায় দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২ রান করা নাথান ম্যাককালামও আউট হয়ে যান। ব্রেন্ডন ম্যাককালাম এবং নাথান ম্যাককালাম, প্রয়োজনীয় সময় দুইটি উইকেটই নিয়ে মালিঙ্গা তার ম্যাজিক দেখান।
এরপর ১৩৪ রানের মাথায় কাইল মিলসকে রানআউটের ফাঁদে ফেলে নবম উইকেটের পতন ঘটলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। কিন্তু টিম সাউদি’র ২১ বলে ১৩ রানের সাবধানী ব্যাটিং জয় নিশ্চিত করে কিউইদের। ৩৬.৩ ওভারে ১৩৯ রান তোলে নিউজিল্যান্ড।
বল হাতে দুই উইকেটের পর, ব্যাট হাতে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করে নাথান ম্যাককালাম ম্যান অব দ্য ম্যাচ জিতে নেন।