দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বাস করুন আর নাই করুন এই প্রেমপত্রটি ১২০ বছর পূর্বের! লিখেছিলেন দিঘাপতিয়ার রাজকন্যা ইন্দুপ্রভা চৌধুরী। গোপনে তুলে রাখা এই রকম ২৮৫টি পত্রের সন্ধ্যান মিলেছে নাটোর জেলা প্রশাসনের ট্রেজারির চাবিহীন একটি ট্রাঙ্ক হতে!
এই প্রেমপত্রটি ১২০ বছর আগে লেখা। এটি লিখেছিলেন দিঘাপতিয়ার রাজকন্যা ইন্দুপ্রভা চৌধুরী। গোপনে তুলে রাখা এই রকম ২৮৫টি পত্রের সন্ধ্যান মিলেছে নাটোর জেলা প্রশাসনের ট্রেজারির চাবিহীন একটি ট্রাঙ্ক হতে।
জানা গেছে, গত সোমবার উদ্ধার করা ট্রেজারিতে শুধু প্রেমপত্র নয়, পাওয়া গেছে তাঁর অপ্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের পাণ্ডুলিপি, রুপার ফ্রেমে বাঁধানো ছবি, দিনলিপি, প্রাচীন পদ্ধতিতে লেখার কাজে ব্যবহৃত রাজকন্যার দোয়াত-কলমসহ আরও অনেক কিছুই!
উল্লেখ্য, আঠারো শতকে নির্মিত দিঘাপতিয়া মহারাজাদের বাসস্থান ছিলো এটি। দয়ারাম রায় (১৬৮০-১৭৬০) এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠিাতা। নাটোর শহর হতে প্রায় ২ দশমিক ৪ কিমি দূরে প্রাসাদটি অবস্থিত। ১৯৫৬ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর এই রাজপরিবারটি ভারতে চলে যান। পরে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু রাজবাড়িটিকে উত্তরা গণভবন ঘোষণার পর হতে এর রক্ষণাবেক্ষণ করতো গণপূর্ত বিভাগ। সম্প্রতি এই রাজবাড়ি হতে গোপনে আমগাছ কেটে নেওয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হলে গত বছরের অক্টোবর মাসে জেলা প্রশাসন রাজবাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গ্রহণ করে।
তারপর জেলা প্রশাসন খোঁজা শুরু করে দিঘাপতিয়ার রাজার স্মৃতিচিহ্নসমূহ। এলাকায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে সিন্দুক। জেলা প্রশাসনের ট্রেজারিতে একটি ট্রাঙ্কের ওপরে লেখা রয়েছে রাজকুমারী ইন্দুপ্রভার নাম। ওই ট্রেজারিতেই পাওয়া যায় মহামূল্যবান পাথরখচিত রাজার মুকুট, জরির জামা, হাতির দাঁতের হাতল লাগানো ছুরি, দামি দামি পাথর কেটে তৈরি রাজবাড়ির থালাবাসনসহ আরও কিছু সামগ্রী।
সেখানে রুপার ফ্রেমে বাঁধানো একটি ছবিও পাওয়া যায়। ছবিটির পরিচয় খুঁজতে গিয়ে ফ্রেম খুলে দেখা যায় যে, ফ্রেমে আড়াল হয়েছিল রাজকুমারী ইন্দুপ্রভার নামটি। রাজবংশের চতুর্থ পুরুষ প্রমথনাথের কন্যা ছিলেন রাজকুমারী ইন্দুপ্রভা। ওই ট্রাঙ্ক হতে বের করা হয় ইন্দুর হাতের লেখা ১০টি ডায়েরিও। এর মধ্যে একটিতে শুধু কবিতা থাকলেও অন্যগুলোতে তাঁর আত্মজীবনী রয়েছে। ইন্দুর কাছে বিয়ের আগে এবং পরে ২৮৫টি চিঠি লিখেছেন মহেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী। প্রতিটি চিঠির শেষঅংশে লেখা রয়েছে, ‘তোমারই মহেন্দ্র’। ইন্দুকে সম্বোধন করা হয়েছে ‘প্রিয়তম’ হিসেবে। প্রায় ১২০ বছর আগের চিঠিগুলো এখনও পড়া যাচ্ছে অনায়াসে।