দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাঝ আকাশে হঠাৎ করেই ভেঙ্গে গেলো বিমানের কাঁচ। প্রচণ্ড বাতাসের চোটে শেষ পর্যন্ত পাইলটের পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হলো! সিচুয়ান এয়ারলাইন্সের যাত্রীবাহী ওই বিমানটি শেষ পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই জরুরি অবতরণ করে।
সংবাদ মাধ্যম বিবিসি বাংলার এক খবরে জানা যায়, সিচুয়ান এয়ারলাইন্সের ওই যাত্রীবাহী বিমানটি চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর চংকিং হতে যাচ্ছিল তিব্বতের লাসা অভিমুখে। ৩২ হাজার ফুট উপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ করে বিমানের সামনের কাঁচটি ভেঙে গেলে পাইলট এক বিধ্বস্ত অবস্থায় উপনিত হন। পরে বিমানটিকে জরুরি ভিত্তিতে অবতরণ করানো হয়।
যখন ওই ঘটনটাটি ঘটে তখন বিমানটি ছিল মাঝ আকাশে অর্থাৎ ৩২ হাজার ফুট উপরে। যাত্রীদেরকে সকালের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছিল এই সময়। হঠাৎ করেই সেসময় বিমানটি ২৪ হাজার ফুট নীচে নেমে আসে। বাইরের বাতাসের চাপ বিমানের ভেতরে পাইলটের একজন সহকারীর শরীরের প্রায় অর্ধেকটায় বাইরে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলো।
বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের তরফ হতে জানানো হয়, সহকারী পাইলট তার হাতে বেশ চোট পেয়েছেন। তার মুখের বিভিন্ন জায়গায় কেটেও গেছে। বিমানটি হুট করে নিচে নামতে থাকায় আরও একজন ক্রু সদস্য তার কোমরে চোট পেয়েছেন।
এরপর পাইলট ১১৯ জন যাত্রীকে নিয়ে বিমানটিকে দক্ষতার সঙ্গে চীনের চেংডু শহরের বিমান বন্দরের রানওয়েতে নামিয়ে আনতে সক্ষম হন। যাত্রীদের বেশ কয়েকজনকে পরে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রাথমিক চিকিৎসা করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সংবাদ মাধ্যমকে পাইলট লিউ চুয়ানজিয়ান বলেছেন, মাঝ আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় ককপিটের ভেতরে হঠাৎ করেই প্রচণ্ড জোরে শব্দ হতে থাকে।
তখন দেখলাম সামনের কাঁচটিতে ফাটল ধরেছে। তখন জোরে একটা শব্দ হলো। তারপর দেখি আমার কো-পাইলটের অর্ধেকটা বাইরে চলে গেছে। সৌভাগ্যবশত, কো-পাইলটের সিটবেল্ট বাঁধা ছিলো, নইলে তাকে বাঁচানো যেতো না। এই সময় তাকে টেনে ককপিটের ভেতরে নিয়ে আসা হয়।
পাইলট আরও বলেছেন, ককপিটের ভেতরে যা কিছু ছিলো তার প্রায় সবই বাতাসে ভাসতে থাকে। শব্দের কারণে আমি রেডিওতেও কোনো কিছু শুনতে পাচ্ছিলাম না। বিমানটি এতো জোরে কাঁপতে লাগলো যে আমি কোনো মিটারও পড়তে পারছিলাম না।
বিমানের জনৈক যাত্রী জানিয়েছেন, আমরা জানতামই না কি হয়েছে। তবে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। অক্সিজেনের মাস্ক তখন নিচে নেমে আসে। কয়েক সেকেন্ডের জন্যে মনে হচ্ছিল যেনো বিমানটি হঠাৎ করেই নিচের দিকে পড়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর সেটি আবার স্থির হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে যুক্তরাষ্ট্রে উড়ন্ত একটি বিমানের জানালা ভেঙে গেলে ভেতরের একজন যাত্রী বাইরের দিকে চলে যেতে থাকে। তখন তাকে কোনো রকমে টেনে ধরে রাখা হয়। পরে অবশ্য তার মৃত্যু ঘটে। বিমানের সামনের কাঁচ ভেঙে যাওয়া খুব একটা অস্বাভাবিক তেমন কিছু নয়। বজ্রপাত বা কোনো পাখির সঙ্গে আঘাত লেগেও এরকম ঘটনা ঘটতে পারে। তবে পুরো উইন্ডস্ক্রিণ উড়ে যাওয়ার ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না।