দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষের কতো রকম সাধ থাকে তা গুনে শেষ করা যাবে না। এবার কলম্বিয়াতে এমন এক ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া গেছে যিনি মনের সুখে সমুদ্রের তলায় চাষাবাদ করছেন!
তবে মনের সুখ যতোই থাক না কেনো তার মুখে রয়েছে অক্সিজেন মাস্ক। কারণ হলো সমুদ্রের গভীরে চাষাবাদ করতে গেলে তাকে অক্সিজেন মাস্কতো পরতেই হবে। আর এভাবেই চলছে এই ‘কৃষিকাজ’। জমিতে প্রবাল বুনছেন কলম্বিয়ার জাভিয়ের বেকার। কোরাল রিফের গুরুত্ব বুঝেই কলম্বিয়ায় সমুদ্রের তলায় এই বিশেষ সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সামুদ্রিক মাছের একটা বড় অংশই বাঁচে প্রবাল প্রাচীরের প্রবাল অর্থাৎ কোরালের উপর নির্ভর করেই। সেখানে জন্মানো নানা ছোট ছোট প্রাণী বা গাছ হতেই পুষ্টি সংগ্রহ করে থাকে মাছ।
ক্যারিবিয়ান সাগরে জাভিয়ের বেকার কলম্বিয়া সান আন্দ্রেজ এই প্রবাল বোনার কাজ শুরু করেন। তিনি সংরক্ষণ করছেন প্রবাল দ্বীপ। সঙ্গে রয়েছেন আরও অনেকেই। যারা কাজ করছেন এখানে এসে।
একটা সুস্থ প্রবাল মূলত প্রকৃতির কাছে একটা সামু্দ্রিক মাছের চেয়েও অনেক বেশি জরুরি। কারণ হলো বিশ্ব উষ্ণায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে এই প্রবাল প্রাচীর।
অতিরিক্ত মাছ ধরা, দূষণ এবং পর্যটকদের দৌরাত্ম্যে প্রবালের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে চলেছে। তাই একাধিক মৎস্যজীবী পরিবার নিয়ে যোগ দিয়েছেন এই প্রবাল বোনার কাজে।
সামুদ্রিক জমিতে কোরাল ফার্মিংয়ের জন্য প্রতিমাসে কলম্বিয়ার সান আন্দ্রেজ এবং প্রভিদেনশিয়ার ৪০ জন মৎস্যজীবী এগিয়ে এসেছেন এই কাজে।
প্রতিমাসে প্রায় ১০ হাজার ৫০০ টাকা (ডলারের হিসেবে ১২৫ ডলার) পান তারা ‘আন্ডার সি গার্ডেনিং’ প্রকল্পের এই কাজের জন্য।
জানা গেছে, প্রথম ধাপের প্রবালগুলোকে সমুদ্রে রাখা হয়েছে। বেঁচেও গেছে এরা। এই আর্কিপেলাগোতে কলম্বিয়ার ৮০ শতাংশ প্রবালের বাসস্থান। ক্যারিবিয়ান সাগরের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রকল্প হলো এই প্রকল্পটি।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, গত বছর প্রায় ১০ হাজার প্রবালের টুকরো নিয়ে সমুদ্রের তলদেশে ভাসমান নার্সারিতে সংরক্ষণের কাজ শুরু করা হয়েছিল।
এই বিশেষ প্রকল্পে যুক্ত ব্যক্তিদের ধারণা হলো, ধীরে ধীরে প্রায় ১৫০ একর এলাকাজুড়ে এই নতুন প্রবাল কলোনি এক সময় গড়ে উঠবে।
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার এক খবরে বলা হয়েছে, এই সংরক্ষিত এলাকাটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সি-ফ্লাওয়ার বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ’। ইউনেস্কো এটিকে ২০০০ সালে সংরক্ষিত হিসেবে ঘোষণা করে।
এখানে শুধু প্রবালই নয়, সমুদ্রের তলার আবর্জনায় আটকে পড়া মাছ, কচ্ছপ কাঁকড়াসহ বিভিন্ন প্রাণীকে রক্ষা করে থাকে এই দলটি।