দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা অনেক সময় ঘুমের নিয়ম করি না। রাতের ঘুম দিনে পাড়ার অভ্যাসও আছে আমাদের অনেকের মধ্যেই এটি মোটেও ঠিক নয়। কারণ অনিয়মিত ঘুমের কারণে আপনার রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
আমাদের সুস্থ থাকতে হলে নিয়মিত ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। কারণ হলো সারা দিনের ক্লান্তি দূর করে ঘুম। তাই প্রতি রাতে ৬ হতে ৭ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তবে অনেকেরই ঘুমের নানা সমস্যা রয়েছে। অনেক সময় ঘুমের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।
কারণ হলো তাদের ঘুম আসে না। অনেকেই ঘুমানোর জন্য ঘুমের ওষুধও খেয়ে থাকেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ খাওয়া মোটেও ঠিক নয়। ঘুমের ওষুধের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতাও আমাদের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
আসুন জেনে নেওয়া যাক অনিয়মিত ঘুম যেসব রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে:
# পর্যাপ্ত ঘুম না হলে কিংবা কম হলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও বাড়াতে পারে। চিকিৎসকদের তথ্য মতে, ঘুম না হলে শরীরের ‘লিভিং অরগানিজমগুলো ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। নষ্ট হতে পারে শরীরের হরমোনের ভারসাম্যও। যে কারণে বাড়াতে পারে উচ্চ রক্তচাপ ও হাইপার টেনশনও।
# ঘুম কম হওয়ার কারণে হার্টের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। ঘুমের সময় হৃৎপিণ্ড এবং রক্তনালি অনেকটা বিশ্রাম পায়। তাই ঘুম কম হলে প্রতিনিয়ত কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা আরও বাড়তে থাকে। যে কারণে হার্টের সমস্যাও বাড়তে থাকে।
# ঘুম পর্যাপ্ত পরিমাণ না হলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও বাড়ে। দীর্ঘদিন রাতে না ঘুমানো কিংবা কম ঘুমানোর কারণে শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। তাই ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।
# মূলত ঘুম শরীরের ক্ষতি পূরণ এবং শক্তি সঞ্চয়ের একটি উত্তম পন্থা। তাই ঘুম কম হলে তা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও নষ্ট হয়। আমরা যখন ঘুমাই, তখন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য দায়ী ‘লিভিং অরগানিজম’ (Living organisms) হয়। তবে আমরা না ঘুমালে এই ‘লিভিং অরগানিজম’গুলো মোটেও কাজ করতে পারে না। যে কারণে ক্রমশ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমতে থাকে।
# মস্তিষ্কে ওরেক্সিন নামে একটি নিউরোট্রান্সমিটার রয়েছে, যা মস্তিষ্ককে সচল রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ওরেক্সিন উৎপাদনের গতি মন্থর হয়ে যাবে, যে কারণে শরীর আরও দূর্বল হয়ে যাবে।
# প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে বাড়তে পারে হজমের সমস্যাও। না ঘুমালে শরীরের পাচন ক্রিয়ায় সাহায্যকারী অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোও সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। যে কারণে খাবার হজমে সহায়ক পাচক রসগুলো উপযুক্ত মাত্রায় নিঃসরণে বাধা পেতে থাকে।
যে কারণে ঘুম আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়। আমাদের দৈহিক প্রায় সব কার্যকলাপই ঘুমের উপরে অনেকটা নির্ভরশীল। তাই কোনও রকম অবহেলা না করে নিয়মিত প্রতিদিন অন্তত ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমানো আপনার জন্য অত্যন্ত জরুরি। তবে ঘুমের সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।