দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একজন মানুষের স্ট্রোক হওয়ার পর ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় রোগী সঠিক চিকিৎসা পেলে সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনাও থাকে। তাই সময়টি একেবারেই নষ্ট করা চলবে না।
স্ট্রোকের কবলে পড়ে শয্যশায়ী জীবন কাটানোর ঘটনা প্রায় সময় শোনা যায়। ব্রেন স্ট্রোক এমনই মারাত্মক একটি অসুখ। অথচ একটু সচেতন হলে এই রোগের হাত থেকে বাঁচা যাবে অনায়াসে।
প্রতি ১০টি মৃত্যুর একটি হয় স্ট্রোকের কারণেই। পঙ্গুত্বের জন্য ঘরবন্দি হয়ে বাকি জীবন কাটানোর পিছনেও একটি মাত্র কারণ, আর তা হলো ব্রেন স্ট্রোক। অথচ একটু সতর্ক হলেই এই মারাত্মক রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। তাই প্রত্যেকেরই উচিত স্ট্রোকের কারণ এবং এটি প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে সম্যক ধারণা গ্রহণ করা।
নিয়মিত চেক আপ ও সতর্কতা মেনে প্রত্যাহ জীবনযাত্রায় কিছু বদল আনলে আচমকা মারাত্মক স্ট্রোকের হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। আসুন আজ জেনে নেওয়া যাক, কী কী কারণে স্ট্রোক হতে পারে।
আমাদের বেঁচে থাকার জন্যে প্রতিটি কোষের প্রয়োজন অক্সিজেন-সমৃদ্ধ রক্ত। মস্তিষ্কের কোষও তার ব্যতিক্রম কিছু নয়। বিভিন্ন কারণে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর পথ সংকীর্ণ হয়ে গেলে কিংবা সেখানে মেদের স্তর জমে রক্ত চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলে মস্তিষ্কের কোষ অক্সিজেনের অভাবে একেবারে নিস্তেজ হয়ে অকেজো হয়ে যায়। এই বিষয়টিই হলো স্ট্রোক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মনে করে, ২০০০ সালের পর নানা সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে, ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সি লোকেরা সবচেয়ে বেশি ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন!
কি লক্ষণ দেখলে সতর্ক হতে হবে
# আচমকা শরীর ভারসাম্যহীন পড়া।
# হঠাৎ করেই এক চোখে কিংবা দুই চোখেই দৃষ্টি হারিয়ে ফেলা।
# মুখের এক দিকে বেঁকে যাওয়া।
# কথা বলতে গিয়ে কথাগুলো জড়িয়ে যাওয়া।
# বাহুতে ব্যথা অনুভব হওয়া।
চিকিৎসকরা মনে করেন, এই সব লক্ষণ দেখা দিলেই সঙ্গে সঙ্গে নিকটবর্তী ভালো হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যেতে হবে। স্ট্রোক হওয়ার পর ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় রোগী সঠিক চিকিৎসা পেলে সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকে। তাই এই সময়টি একেবারেই নষ্ট করা যাবে না।
কেনোই বা বাড়ে ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি?
# খিদে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্যাকেটবন্দি নোনতা কুকিজ, বা চিপ্স নিজে যেমন খাচ্ছেন, শিশুকেও কিনে দিচ্ছেন সব সময়। তবে এ সবে মিশে থাকা অতিরিক্ত লবণ যে নিঃসাড়ে স্ট্রোক ডেকে আনছে তা কী আপনি জানেন? অতিরিক্ত লবণের প্রভাবে রক্তচাপ বাড়ে ও সেটি মস্তিষ্কে রক্ত সংবহনেও বাধা দেয়। যে কারণে আজই রাশ টানুন অতিরিক্ত লবণ মেশানো খাবার।
# সকালে নিয়মিত সিরিয়াল জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করেন অনেকেই। এই সব সিরিয়ালে অতিরিক্ত চিনিও থাকে। এছাড়াও প্রতিদিনের ডায়েটে অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার যেমন- মিষ্টি, কেক, কুকিজ, পেস্ট্রি রাখাও ভালো না। এতে করে বাড়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি।
# ‘দ্য ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত ২০১৯-এর এক গবেষণা বলছে, যারা মদ্যপান করেন না এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খান তারা স্ট্রোকের থেকে অনেকটা নিরাপদে থাকেন। তুলনামূলকভাবে মদ্যপায়ীরা রয়েছে বিপদে।
# আপনার শরীরে ভিটামিন সি-এর কোনও অভাব পড়ছে কি না, সে দিকে ভালো মতো খেয়াল রাখতে হবে। হেমোরহ্যাজিক স্ট্রোককে ডেকে আনে এই ভিটামিনের ঘাটতির কারণে। তাই প্রতিদিন পাতে রাখুন ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার।
# অনেকেই একটু-আধটু ব্যথাবেদনা হলেই মুঠো মুঠো বেদনানাশক ওষুধ খেয়ে ফেলেন। এতে থাকা স্টেরয়েড ভাস্কুলার ডেথ, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো অসুখের আশঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ। কাজেই অতিরিক্ত এইসব খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা পরিত্যাগ করতে হবে আপনার স্বার্থেই। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।