দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন যে, সাপ্লিমেন্ট খেলে আর ওষুধ খাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আবার কারও কারও ধারণা এই ধরনের খাবারে খেলে পরবর্তীকালে শরীরে নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে। আসলে কী হতে পারে?
কোভিডের পর হতে সাধারণ মানুষের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ নিয়ে বেশ সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করতে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টিবডির জোগান দিতে নানা রকম খাবার-খাওয়া, ‘ইমিউনিটি বুস্ট’ করে এমন অনেক খাবারই সাপ্লিমেন্ট হিসাবে খাওয়া শুরু করেন অনেকেই। বর্তমানে বর্ষাকাল। নানা রকম ভাইরাস কিংবা ব্যাক্টেরিয়াবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এই সময় বেড়ে যায়। যে কারণে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমতে থাকে। তার উপর রয়েছে দোসর ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, ভাইরাল জ্বর। যারমধ্যে কোনও একটি রোগে আক্রান্ত হলেই শারীরিকভাবে ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়ছেন অনেকেই। এই দুর্বলতা কাটাতে ভিটামিন, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, জ়িঙ্কের মতো যৌগ বিশেষভাবে প্রয়োজন।
খাবারের মাধ্যমে সাধারণ এই সব যৌগের জোগান দেওয়া সম্ভব হয় না বলে অনেক সময় বাইরে থেকে ‘মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট সাপ্লিমেন্ট’ও খেতে হয়। বিশেষ এই খাবারটি নিয়ে মানুষের মনে নানা রকম ধারণা বিদ্যমান। অনেকেই মনে করেন যে, এই ধরনের খাবার খেলে পরবর্তীসময় শরীরে নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে।
মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট সাপ্লিমেন্ট কেনো প্রয়োজন?
# বয়স বাড়লে শরীরের এই সব প্রয়োজনীয় খনিজের মাত্রাও তখন কমতে থাকে। কম বয়সে খাবারের মধ্যে থেকে খনিজ শোষণ করার যে ক্ষমতা থাকে বয়সকালে তা অনেকটা হ্রাস পেতে পারে। সে কারণে বাইরে থেকে সাপ্লিমেন্টের জোগান দিতে হয়।
# রাসায়নিক দেওয়া সব্জিতে পুষ্টিগুণ একেবারেই থাকে না বললেই চলে। রান্না করার সময় অতিরিক্ত তাপ কিংবা মশলার কারণে খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে। তখন বাইরে থেকে সেই সব খনিজের জোগানও দিতে হয়।
# নিয়মিত যারা শরীরচর্চা করেন, তাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের খনিজের প্রয়োজন বেশি হয়। কায়িক পরিশ্রম করলে ঘামের মধ্যদিয়ে প্রয়োজনীয় অনেক উপাদানই তখন বেরিয়ে যায়। শুধু খাবারের মাধ্যমে সেটি পূরণ করা সম্ভব হয় না। তখন বাইরে থেকে সেইসব খনিজের জোগান দিতে হয়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org