দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলো তাদেরসঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
সম্প্রতি তাদের মনোযোগ পুরোপুরি ইসরায়েলের দিকে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির কয়েকজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে টাইম ম্যাগাজিন।
রিপোর্টে বলা হয় যে, জেলেনস্কির মিত্ররা মনে করেন যে, তিনি ‘অবাস্তব চিন্তায়’ মশগুল ও রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জেতা আসলেও অসম্ভব।
গত মাসে ওয়াশিংটন সফরের সময় টাইম ম্যাগাজিনের সঙ্গে কথা বলেন জেলেনস্কি এবং তার উপদেষ্টারা। গত ডিসেম্বর মাসে আমেরিকায় তাকে বীরের মতো স্বাগত জানানো হলেও এবার কিন্তু তা হয়নি। এমনকি জেলেনিস্ককে ক্যাপিটল হিলে আইনপ্রণেতাদের সামনে বক্তব্যও দিতে দেওয়া হয়নি।
যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কিয়েভকে সমর্থন অব্যাহত রাখতে এখনও বেশ আগ্রহী। তবে রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসের কারণে তার এই প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
ইউক্রেনকে সহায়তা দিতে নতুন বিল পাসের বিষয়েও ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারছে না কংগ্রেস। শুধু তা-ই নয়, প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন এই মুহূর্তে ইউক্রেনকে বাদ রেখে ইসরাইলকে সহায়তা দিতে চলতি সপ্তাহেই বিল পাসের কথা বলেছেন।
এই অবস্থায় আমেরিকায় জেলেনস্কির এক সফরসঙ্গীর বরাত দিয়ে টাইম ম্যাগাজিন লিখেছে যে, জেলেনস্কি মনে করেন তার পশ্চিমা মিত্ররা বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তারা ইউক্রেনকে এমনভাবে সহায়তা করছে যাতে যুদ্ধ টিকে থাকে এবং ইউক্রেন বিজয়ী হতে না পারে।
জেলেনস্কি নিজেও টাইমকে বলেন যে, সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে, গোটা বিশ্বই এখন ইউক্রেন যুদ্ধকে স্বাভাবিক অবস্থা হিসেবে মেনে নিয়েছে। যুদ্ধ নিয়ে মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। আপনি এটা আমেরিকা এবং ইউরোপেও দেখতে পাবেন। তাদের ওপরে ক্লান্তি ভর করেছে মানে এখন এই যুদ্ধ তাদের কাছে মূলত একটি ‘শো’তে পরিণত হয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org