দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে ইসরাইলের আক্রমণ। নির্বিচারে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। এবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একই পরিবারের ২১ সদস্য নিহত হলেন।
আহমেদ ভোর ৪টার সময় জেগে উঠলেন। সাধারণত এই সময় গভীর ঘুমে থাকলেও এবার তার মনে হচ্ছিল কিছু একটা মনে হয় ঠিক নেই।
যুদ্ধের শুরু হতেই মনোযোগ দিয়ে তার পরিবারের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চেক করে আসছেন লন্ডনে বসবাসকারী আহমেদ।
ইসরায়েল গাজায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার পর থেকেই তার বাবা ও ভাই-বোনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা কঠিনই ছিল। তবে দুই দিন আগে তার বোন ওয়াল্লাহর কাছ থেকে একটি বার্তা আসে।
ওয়াল্লাহ গ্রুপে লিখেছেন, বোমায় তার বাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাড়ির ভেতরের জানালা ও দরজা সব ভাঙ্গা ছিল।তবে জরুরি বিষয় হলো আল্লাহ আমাদের রক্ষা করেছেন। আমরা সবাই ভালো রয়েছি।
আহমেদ উত্তরে লিখলেন, বাড়ি পরে ঠিক করা যাবে, গুরুত্বপূর্ণ হলো তুমি নিরাপদ আছো। ওয়াল্লাহ আর তার চার সন্তান গাজার মাঝখানে দেইর আল-বালাহতে তাদের বাবার বাড়িতেই চলে যান।
সেই রাতে আহমেদ যখন জেগে ওঠেন তার পরিবারের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটিও একেবারে শান্ত ছিল। তিনি আরও বেশ কিছু লোকের বার্তাও দেখতে পান, যা পাঠানোর পর আবার মুছে ফেলা হয়েছে।
তিনি গাজায় এক বন্ধুকে ফোন করেন কী হচ্ছে তা জানার জন্য। তিনি তখন জানতে পারেন তার পরিবারের সবাই মারা গেছেন।
যুদ্ধের শুরু থেকেই আহমেদ ও তার গাজার ফ্ল্যাটমেটরা জাহান্নামের মতোই একটি অবস্থায় বসবাস করছেন। তাদের ফোন মূলত ধ্বংস ও মৃত্যু খবরের ভান্ডার হয়ে উঠেছে।
প্রতিদিন তাদের জানানো হয়- প্রতিবেশী, বন্ধু বা যার সঙ্গে তারা স্কুলে গিয়েছিল তাদের মধ্যে কেও না কেও মারা গেছে। তবে তিনি কখনই ভাবেননি যে, এই যুদ্ধ সরাসরি তার পরিবারের দিকেই আসবে। কারণ হলো তাদের বাড়ি দেইর আল-বালাহর মাঝখানে এমন এক এলাকায় যা আগে কখনও লক্ষ্যবস্তুই হয়নি।
ইসরায়েলের বিমান হামলায় যখন তাদের বাড়িটি ভেঙে পড়ে তখন সব মিলিয়ে ২১ জন মানুষ মারা গেছেন, যাদের মধ্যে ছিল আহমেদের বাবা, তার তিন বোন, দুই ভাই ও তাদের ১৫ জন সন্তান।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org