দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতে রক্তবাহিকা, ধমনী সঙ্কুচিত হয়ে যায়। রক্ত চলাচলে সমস্যা হলে ঋতুস্রাবের ব্যথাও তখন বাড়তে পারে। তাছাড়াও রক্তে ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে, শরীরচর্চা না করলেও ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। এই ক্ষেত্রে করণীয় কী?
আমরা জানি ঋতুস্রাবের ব্যথায় মাসের কয়েকটা দিন খুবই অস্বস্তিতে কাটে মেয়েদের। কারও কারও আবার অতিরিক্ত রক্তপাত, কারও আবার পেটে অসহ্য যন্ত্রণাও হয়। সঙ্গে দুর্বলতাও থাকেই। তবে পেটে যন্ত্রণার সমস্যায় কমবেশি সকলেই ভুগে থাকেন। তবে ঠাণ্ডার সময় নাকি এই ধরনের কষ্ট আরও বেড়ে যায়। চিকিৎসকেরা বলেছেন, শীতের এই সময় ঠাণ্ডায় রক্তবাহিকা, ধমনী সঙ্কুচিত হয়ে যায়। রক্ত চলাচলে সমস্যা হলে এই ধরনের ব্যথাও হতে পারে। তাছাড়াও রক্তে ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে কিংবা শরীরচর্চা না করলে ব্যথার পরিমাণও বেড়ে যেতে পারে। তাছাড়া শীতকালে অনেকেই পানি খাওয়ার প্রবণতাও কমে যায়। শরীরে পর্যাপ্ত পানির অভাবেও অনেক সময় ঋতুস্রাব চলাকালীন ব্যথা হতে পারে।
শরীর উষ্ণ রাখুন
ঋতুস্রাবের কষ্ট থেকে আরাম পেতে হলে শরীরকে উষ্ণ রাখতে হবে। প্রয়োজন হলে মোজাও পরতে পারেন। ধমনী সঙ্কুচিত হওয়ার সমস্যা অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এই টোটকাটি।
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খান
শীতকালে পানি খেতে ইচ্ছে করে না। তবে ঋতুস্রাব চলাকালীন যদি পানির অভাব ঘটে, সেই ক্ষেত্রে শরীর থেকে সহজেই টক্সিন দূর করা যাবে না। হরমোনের মাত্রাতেও হেরফের ঘটতে পারে। তাই এই সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানীয় খাওয়াটা জরুরি।
হালকা শরীরচর্চা করুন
ঋতুস্রাব চলাকালীন সময় ব্যায়াম করতে কষ্ট হয়। তবে চিকিৎসকরা বলেছেন, এই সময় হালকা শরীরচর্চা করলে পেটের পেশি শিথিল হবে। যে কারণে ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়াও তখন সহজ হবে।
উষ্ণ পানিতে গোসল
ঋতুস্রাব চলাকালীন শারীরিক আড়ষ্টতা কাটাতে অনেকেই ঈষদুষ্ণ পানিতে গোসল করেন। সারা দেহের তো বটেই, পেটের পেশি শিথিল রাখতেও সাহায্য করে এই ঈষদুষ্ণ পানিতে গোসল করা।
পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে
ঋতুস্রাবের এই সময়টিতে বিভিন্ন ভিটামিন, প্রোটিন ও খনিজে ভরপুর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদরা। সেইসঙ্গে, যে সমস্ত খাবার খেলে পেটের সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে, সেইসব খাবার এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org