দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি ফল মাত্রেই স্বাস্থ্যকর। কমলালেবুরও স্বাস্থ্যগুণও কিন্তু কম নয়। তবে বেশি খেলে কী কোনও সমস্যা হতে পারে? আজ জেনে নিন সেই বিষয়টি।
কমলালেবু কিন্তু সারাবছর পাওয়া যায় না। তাই শীতকালে বাঙালি বাড়িতে কমলালেবুর কদর একটু বেশিই থাকে। কমবেশি সবাই এই সময় কমলালেবু কিনে থাকেন। শীতের এই সময় রোদে বসে খোসা ছাড়িয়ে কমলালেবুর কোয়া মুখে পুরতে ভালোই লাগে। আবার অফিসে কাজ করতে করতে কমলালেবুর খাওয়ার মজাই কিন্তু আলাদা। অন্য ফল খাওয়াতে নাজেহাল হতে হলেও, বাচ্চারা সোনামুখ করে কমলালেবু খেয়ে থাকে।
শীতে কমলালেবু হলো নিত্যদিনের সঙ্গী। শীত ফুরিয়ে গেলে কমলালেবুও আর তেমন একটা পাওয়া যাবে না। তাই শীত থাকতে থাকতে যতোটা এর স্বাদ আস্বাদন করে নেওয়া যায় ততোই ভালো।
এই কমলালেবুতে রয়েছে ভরপুর পরিমাণে ভিটামিন সি। প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ভিটামিন সি-এর জুড়ি নেই। শীতকালীন সর্দি-কাশি থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে এই কমলালেবু। এছাড়াও শীতকালে পানি খাওয়ার প্রবণতাও অনেকটা কমে যায়। সেই ক্ষেত্রে পানির বিকল্প হতে পারে এই কমলালেবু।
ত্বকের যত্ন নিতেও কমলালেবুর ভূমিকা রয়েছে ব্যাপক। কমলালেবুতে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের পুষ্টি কোলাজেন উৎপাদন করতেও সাহায্য করে। এছাড়াও কমলালেবুতে রয়েছে ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও মিনারেলস- সামগ্রিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে কমলালেবু সত্যিই ভিষণ উপকারী।
শীতকালে গ্যাস-অম্বলের সমস্যাও অনেকটা বেশি থাকে। কমলালেবু সেই ঝুঁকি কমায়। কারণ হলো কমলালেবুতে রয়েছে ফাইবার। পেটের গোলমাল নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ফাইবার কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। মোট কথা কমলালেবু নিঃসন্দেহে শরীরের যত্ন নিতে সাহায্য করে।
তবে জেনে রাখবেন স্বাস্থ্যকর খাবার হলেও অত্যাধিক হারে কোনও কিছুই খাওয়া মোটেও ভালো নয়। কমলালেবু হজমের গোলমাল থেকে রক্ষা করে এটি ঠিক। তবে বেশি কমলালেবু খেলে আবার পেটের গোলমালও দেখা দিতে পারে। এছাড়াও কমলালেবু হলো সাইট্রাস জাতীয় ফল। কিডনির সমস্যা থাকলে এই গোত্রের ফল এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। এছাড়াও অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে কমলালেবু বেশি না খাওয়াই ভালো। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org