দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত সপ্তাহজুড়ে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে আকাশ হতে একইসঙ্গে আমেরিকার বোমা ও খাদ্য সহায়তার প্যাকেট পড়ছে।
একদিকে হত্যার জন্য শক্তিশালী বোমা সরবরাহ করা হচ্ছে, অপরদিকে জীবন বাঁচাতে খাদ্য সহায়তা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে আবারও ভারসাম্য খুঁজে পেতে মরিয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
গাজায় অতি প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে উড়োজাহাজ থেকে বাইডেনের খাদ্য সহায়তা এবং সেই লক্ষ্যে একটি অস্থায়ী ভাসমান বন্দর নির্মাণ তার নীতির ভারসাম্যহীনতাকে তুলে ধরেছে। কারণ হলো, তিনি গাজার শাসকগোষ্ঠী সশস্ত্র হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযানে এখনও অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রেখেছেন।
গাজা যুদ্ধে বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দু’দিকেই নিজেকে যেনো গুলিয়ে ফেলেছে। ইসরায়েলি বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ করা ও সেই অস্ত্রে আহত ফিলিস্তিনিদের সেবা দেওয়ার চেষ্টাও করছে বাইডেন প্রশাসন।
এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজার বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য আরও কিছু করার জন্য বাইডেনের অনুরোধকে অস্বীকারও করেছেন। এতে বাইডেন ক্রমশ হতাশ হয়ে পড়েছেন ও গত সপ্তাহে তার স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে এবং এর পরেও সেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি যুদ্ধের প্রভাব কমিয়ে আনতে অস্ত্র সরবরাহ কমানোর বিরোধিতাও করছেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান রো খান্না বাইডেনের বক্তৃতার পরদিন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, ‘আপনি একই সময় খাদ্য এবং খাদ্য ট্রাকগুলোতে বোমা ফেলার জন্য ইসরায়েলকে সহায়তা ও অস্ত্র দেওয়ার নীতি কার্যকর করতে পারেন না। যারমধ্যে অন্তর্নিহিত দ্বৈতনীতি বিদ্যমান।’
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org