দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাজারের সস্তা-দামি পানীয়ে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ও ভরপুর মাত্রায় চিনি থাকে। যা ডায়াবেটিস রোগিদের শরীরের পক্ষে মোটেও ভালো নয়। এই ক্ষেত্রে কোন কোন পানীয় খেতে পারেন?
বর্তমান সময়ের সূর্যের চোখরাঙানিতে প্রাণ যায় যায় অবস্থা। দুপুরে রাস্তায় বেরোনো মানেই ঘেমে একাকার অবস্থা হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়ার পরমর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। পানির ঘাটতি মেটানোর পাশাপাশি, শরীরকে ঠাণ্ডা রাখাও ভীষণভাবে দরকার। এই ক্ষেত্রে ভরসা রাখতে পারেন বিভিন্ন প্রকার পানীয়তে। তবে ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে মিষ্টিযুক্ত পানীয় খাওয়া মোটেও ঠিক নয়। বাজারের সস্তা-দামি পানীয়ে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ এবং ভরপুর মাত্রায় চিনি থাকে। যা শরীরের পক্ষে মোটেও ভালো নয়। এই ক্ষেত্রে কোন কোন পানীয় খাওয়া যাতে পারে? আজ সেটি জেনে নিন।
ডাবের পানি
ডাবের পানি ইলেকট্রোলাইটের খুব ভালো উৎস। গরমের দিনে নিয়মিতভাবে ডাবের পানি খেলে শরীরে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি কমে। পেট ঠাণ্ডা থাকে। ডাবের পানি শরীরে সোডিয়াম, পটাশিয়ামের ভারসাম্যও বজায় রাখে। তাছাড়াও এই পানিতে ফাইবার, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ভরপুর মাত্রায় থাকে। এতে ক্যালোরির মাত্রাও কম থাকে। তাই গ্রীষ্মের এমন দিনে ডায়াবেটিক রোগীরা ডাবের পানি খেতে পারেন। তাতে করে শরীর চাঙ্গা থাকবে।
বার্লি ভেজানো পানি
সাধারণ বার্লিতে অদ্রবণীয় ফাইবার ভালো মাত্রায় থাকে। গরমের দিনে ডায়াবিটিসের সমস্যা থাকলে বার্লি ভেজানো পানি খেতে পারেন। এই পানি রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।
বেলের শরবত
বেলে ফেরোনিয়া গাম নামে একটি বিশেষ যৌগ থাকে, যা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। বেলে থাকা বিভিন্ন যৌগ অগ্ন্যাশয়কে ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিক রোগিরা গরমের সময় নিয়ম করে বেলের শরবত খেতে পারেন।
ঘোল
দই, পুদিনা পাতা, বিট লবণ ও ভাজা জিরের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি পাতলা ঘোল ডায়াবেটিকরা নিয়ম করে গরমের দিনে খেতেই পারেন। ঘোলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে। ঘোল পেটের স্বাস্থ্যের জন্যও বেশ উপকারী একটি জিনিস।
লেবু-আদার শরবত
আদা ডায়াবেটিস রোগীদের পক্ষে ভিষণ উপকারী। টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে আদা। ডায়াবেটিসের কারণে দৃষ্টিশক্তিও কমতে শুরু করে। আদা খেলে সেই সমস্যার হাত থেকেও রেহায় পাওয়া যায়। তাই গরমের দিনে লেবু-আদার শরবত খেতেই পারেন। তবে চিনি ছাড়া খেতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org