দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শরীরে পেসমেকার বা কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বসিয়ে জীবনযাত্রার মানের উন্নতির চেষ্টা হয়েছে এতোদিন যাবত। কিন্তু এবার ইলন মাস্ক মানুষের মস্তিষ্কে চিপ বসিয়ে যন্ত্রের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের বিতর্কিত প্রযুক্তি চালু করার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন।
টেলিপ্যাথি নামে এক ওয়্যারলেস চিপ সফলভাবে এক মানুষের মস্তিষ্কে বসানো হয়। মার্কিন কোটিপতি ইলন মাস্ক সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এমনটিই ঘোষণা করেছেন। মোটকথা মানুষের মস্তিষ্কের সঙ্গে কম্পিউটার সংযুক্ত করাই এই উদ্যোগের একমাত্র লক্ষ্য। সেই ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীরা শুধু চিন্তার মাধ্যমে ডিজিটাল পরিষেবার সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারবেন। শুনতে খুবই ভবিষ্যতধর্মী মনে হলেও বাস্তবে সেটি সত্যি কতোটা যুগান্তকারী? তথাকথিত বিসিআই নামে ডিভাইসগুলো মস্তিষ্কের কার্যকলাপ পরিমাপ করে সেই সংকেত ডিজিটাল কমান্ডে রূপান্তরিতও করতে পারে! এমন কোনো ডিভাইস ব্যবহার করলে নীতিগতভাবে কোনো ডিজিটাল ডিভাইসের সঙ্গে একেবারেই নতুন এবং বিরামহীন উপায়ে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব। ইলন মাস্কের ভাষায় টেলিপ্যাথি ফোন কিংবা কম্পিউটারের উপর নিয়ন্ত্রণ সম্ভব করবে। শুধু চিন্তাশক্তির বলে সেগুলোর মাধ্যমে প্রায় যে কোনো ডিভাইস চালনা করা যাবে!
শুনে মনে কৌতূহল লাগলেও এর এক বড় ঘাটতিও রয়েছে। কারণ ইলন মাস্কের চিপ মস্তিষ্কে ইমপ্লান্ট করতে হবে। এক রোবটই সেই অপারেশন করবে। মানুষের চুলের থেকে বেশি চিকন ৬৪টি নমনীয় সূতা চিপ থেকে মস্তিষ্কে যোগাযোগ স্থাপন করবে। রোগগ্রস্ত কিংবা প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য এমন অস্ত্রোপচার হয়তো উপকারও বয়ে আনবে সেটি হয়তো ঠিক। যেমন কারো মৃগী রোগ থাকলে বিসিআই আগে থেকেই সম্ভাব্য খিঁচুনি শনাক্ত করে সেটি এড়িয়ে যেতে সাহায্যও করতে পারে। মাস্ক নিজেই অন্যান্য সম্ভাবনার উল্লেখও করেছেন। তাঁর বার্তা অনুযায়ী, যারা নিজেদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যবহার করতে পারেনই না, তাঁরাই হবেন প্রাথমিক ব্যবহারকারী। একবার ভেবে দেখুন, স্টিফেন হকিং যদি স্পিড টাইপিস্ট কিংবা নিলামকারীর তুলনায় দ্রুত ভাবের আদান-প্রদান সত্যিই করতে পারতেন, তাহলে কী ঘটতো? তিনি খুব সম্ভবত সেই প্রযুক্তি পছন্দ করতেন এবং সেটি থেকে তিনি উপকারও পেতেন। তথ্যসূত্র: ডয়েচে ভেলে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org