দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময় প্রযুক্তির সর্বোচ্চ উৎকর্ষতার সময়। প্রযুক্তি মানুষের মস্তিষ্ককে পরিবর্তন করে। আমাদের অনুভুতি, চিন্তা, ঘুম এমনকি স্বপ্নকেও পরিবর্তন করে দেয়। আসুন জেনে নিই প্রযুক্তি যে আটটি উপায়ে আমাদের মস্তিষ্ক পরিবর্তন করে।
১) রঙিন স্বপ্ন দেখাঃ ২০০৮ সালে স্কটল্যান্ডের Dundee University এর একটি গবেষণায় জানা গেছে যারা ৫৫ বছরের বেশি বয়সী এবং সাদা – কালো টেলিভিশন দেখেছেন তারা স্বপ্ন দেখেন সাদা – কালো। আর যারা রঙ্গিন টেলিভিশন দেখে অভ্যস্ত তারা রঙ্গিন স্বপ্ন দেখে।
২) অনুভুতি হারিয়ে যাওয়ার ভয়ঃ
ফেসবুক কিংবা ইনস্টাগ্রাম আসার পূর্বে, অধিকাংশ মানুষ তাদের ছুটির দিনে বাড়িতে ছোট আড্ডা কিংবা ঘরোয়া পার্টি আয়োজন করে সময় কাটিয়ে দিত। কিন্তু এখন তাদের আনন্দের যে কোন সময়ের ছবি, ভিডিও ফেসবুক কিংবা ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে নিতে পারে। এই কারণে যে কোন মুহুর্তের অনুভুতি ধরে রাখার ইচ্ছা জাগ্রত হয়েছে সবার মধ্যে, সেই সাথে বেড়েছে অনুভূতি হারিয়ে যাওয়ার ভয় যাকে বলা হয় ফোমোর অভিজ্ঞতা গ্রহণ করা।
৩) ফ্যান্টম ভাইব্রেশন সিন্ড্রোমঃ এই ব্যাপারটি অনেকের হয় – কল না আসলেও অবচেতন মনে আমরা ভাবি আমাদের ফোন বাজতেছে। Computers and Human Behavior নামক জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় জানা গেছে ২৯০ জন গ্রাজুয়েটে পড়াশোনারত ছাত্রদের মধ্যে শতকরা ৮৯ জনই ফ্যান্টম ভাইব্রেশন সিন্ড্রোমে ভুগেন। অর্থ্যাৎ ফোনে কল না আসলেও ফোনটি ভাইব্রেট করছে এমন অনুভূতি অনুভব করেন।
৪) অনিদ্রা সৃষ্টিঃ
রাতে কম্পিউটার, ল্যাপটপ কিংবা আইফোন ব্যবহার অনিদ্রা সৃষ্টি করে। গবেষণায় জানা গেছে – এইসব যন্ত্রাংশের আলো আমাদের দেহের ঘুম আসার হরমোনের সাথে সংঘাত তৈরি করে, আবার এই আলো দেখে মস্তিষ্ক সেটিকে দিনের আলো ভেবে বিভ্রান্ত হতে পারে। ফলশ্রুতিতে রাতের বেলা ঘুম না আসার পরিস্থিতি তৈরি হয় স্বয়ংক্রিয়ভাবেই।
৫) মনোযোগ ক্ষমতা নষ্ট এবং স্মৃতিহীনতা সৃষ্টিঃ আগেকার যুগে মানুষ ছড়া, কবিতা বা গল্প মনে রাখতে পারত এবং অনেক পরে সেসব মনে করতে পারত। কিন্তু বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগে গুগলে এক ক্লিকের বিনিময়ে তথ্য পেয়ে যাওয়ায় মানুষ যে কোন জিনিস মনে রাখে কম। এমনকি সামাজিক মিডিয়া এবং ইন্টারনেট আবিষ্কারের পরে মানুষ এক নাগাড়ে বই পড়ার অভ্যাস থেকে দূরে সরে গেছে।
৬) দৃষ্টিশক্তি উন্নত হওয়াঃ
২০১৩ সালের একটি গবেষণায় জানা গেছে যারা ফার্স্ট শ্যুটিং গেমস যেমনঃ কল অফ ডিউটি, হ্যালো খেলতে অভ্যস্ত, তাদের দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয় এবং একইসাথে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা সৃষ্টি হয়।
৭) প্রেরণার শক্তি কমে যায়ঃ ২০১৩ সালের একই গবেষণায় জানা যায় ‘হেলো’এর মত ভায়োলেন্ট গেমস খেলার ফলে মানুষের প্রেরণার শক্তি কমে যায়। একইসাথে ভায়োলেন্ট গেমসের সাথে মানুষের আক্রমণাত্মক হওয়ার একটা সম্পর্কও খুঁজে পাওয়া গেছে।
৮) নতুন সৃষ্টিঃ
এত সব জটিলতার পরেও আশার খবর হচ্ছে, ক্রিয়েটিভ বিষয়গুলোতে শিল্পকর্ম সৃষ্টিতে প্রযুক্তি অনেক সহজ করে দিয়েছে। সামাজিক সাইটগুলোতে ছবি, টেক্সট কিংবা ভিডিও শেয়ারিং এর ফলে নতুন নতুন আইডিয়ার জন্ম হয় প্রতিনিয়ত। মুভি রিভিউ, ফ্লিকারে ফটোগ্রাফি কিংবা উইকিপিডিয়াতে অবদান রাখা – এইসব কিছু নতুন সৃষ্টির সম্ভাবনার পথ করে দেয়।
তথ্যসূত্রঃ ম্যাশেবল