দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলের গণহত্যা এবং আগ্রাসন পুরোপুরি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত বন্দি বিনিময় চুক্তি কিংবা কোনো প্রকার যুদ্ধবিরতিতে যাবে না হামাস।
স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি ছাড়া গাজা সরকার একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হতে যাচ্ছে বলে যখন ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো খবর প্রচার করা শুরু করেছে, তখন এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠনটি। -খবর ইরানভিত্তিক প্রেসটিভি’র।
গত শনিবারও মিশরের রাজধানী কায়রোতে সিআইএ পরিচালক উইলিয়াম বার্নসসহ মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করে হামাসের একটি প্রতিনিধিদল। এর পরপরই যুদ্ধবিরতির এই গুঞ্জন শোনা যায়। হামাসের সিনিয়র নেতা হিসাম বারদান কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ফিলিস্তিনি জনগণের দুঃখ-দুর্দশার অবসানের জন্য হামাস একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তবে সেই চুক্তি যে কোনো মূল্যে হবে না।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার উগ্র মন্ত্রিসভা কাল্পনিক কিছু অভিযোগ তুলে যুদ্ধবিরতির আলোচনা ভন্ডুল করার ষড়যন্ত্রও করছে, এমন অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নিজের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক ভবিষ্যতের স্বার্থে বন্দিদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন।
অপরদিকে বন্দি বিনিময় চুক্তিতে সম্মত হতে গাজার হামাস সরকারকে ৭ দিনের সময় বেঁধে দেয় দখলদার ইসরায়েল। এই সময়ের মধ্যে চুক্তি না করলে গাজার রাফাহ শহরে হামলা চালানো হবে বলে হুমকি দেয তেল আবিব।
এদিকে হামাস বলছে, গণহত্যা এবং আগ্রাসন বন্ধ করে গাজা হতে স্থায়ীভাবে দখলদার সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। এই শর্ত মেনে না নেওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো চুক্তিই হবে না। প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল শনিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল যে, মিশর এবং ইসরায়েলের তৈরি এই চুক্তি প্রত্যাখ্যান করার বদলে হামাস নতুন প্রস্তাবও দিতে পারে। তবে গাজায় অবস্থানরত হামাসের প্রভাবশালী নেতা ইয়াহিয়া সিনাওয়ার এখনও এই প্রস্তাবের বিষয়ে কোনো রকম মন্তব্য করেননি। তার কাছে নতুন প্রস্তাবটি পৌঁছেছে কিনা তাও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যমগুলো।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org