দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই হাঁটুর ব্যথার ভয়ে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা বন্ধ করে দেন। এতে কী কোনো লাভ হয়, না কি উল্টো আরও ক্ষতি হয়? কয়েকটি কাজ অজান্তেই হাঁটুর ব্যথা আরও বাড়িয়ে দেয়।
অনেকেই মনে করেন বয়স বাড়লেই হাঁটুর ব্যথা শুরু হয়। তবে হাঁটু ব্যথার সঙ্গে বার্ধক্যের কোনও সম্পর্ক নেই। যে কোনও বয়সে হাঁটুতে ব্যথা হতেই পারে। শরীরের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হলে হাঁটুতে ব্যথা হয়ে থাকে। এছাড়াও, শরীরচর্চা না করা, অফিসে দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকাও হাঁটু ব্যথার অন্যতম একটি কারণ। হাঁটুর যন্ত্রণা থেকে দূরে থাকতে জীবনধারায় পরিবর্তন আনাটা জরুরি।
মানবদেহের অন্যতম প্রধান ভারবাহী অস্থিসন্ধি হলো হাঁটু। অতিরিক্ত ওজন, কায়িক শ্রমের অভাব, ফ্ল্যাট ফুটসহ নানা কারণে হাঁটুর অস্থিসন্ধির সমস্যাও দেখা দেয়। অস্টিয়োআর্থ্রাইটিস কিংবা বাত হলেও হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে। তাছাড়াও, হাঁটু এবং ঊরুর পেশি দুর্বল হলেও হাঁটুর ব্যথা বেড়ে যেতেই পারে। অতিরিক্ত দৌড়াদৌড়ি করলেও হাঁটুর অস্থিসন্ধির দুর্বলতা বাড়ে অনেক সময়, সেই থেকেও ব্যথা হয় অনেক ক্ষেত্রে। অনেকেই হাঁটুর ব্যথার ভয়ে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামাই করা বন্ধ করে দেন। এতে কী লাভ হয় না-কি উল্টো আরও ক্ষতি হয়?
তবে সিঁড়ি দিয়ে ওঠার চেয়ে হাঁটুর অস্থিসন্ধিতে বেশি চাপ পড়ে সিঁড়ি বেয়ে নামার সময়। শরীরের ওজনের প্রায় সাড়ে ৩ গুণ চাপ পড়ে। অর্থাৎ, যার ওজন ৫০ কেজি সিঁড়ি দিয়ে নামার সময়, তার হাঁটুতে চাপ পড়বে প্রায় ১৭৫ কেজি। কন্ডোম্যালেশিয়া প্যাটেলা অর্থাৎ, হাঁটুর অস্থিসন্ধির কার্টিলেজ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সিঁড়ি দিয়ে উঠলে কিংবা নামলে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। তাই হাঁটুর সমস্যা থাকলে সিঁড়ির বদলে লিফ্ট ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
হাঁটুর ব্যথা থাকলো কোন কাজ একেবারেই বন্ধ করতে হবে?
# কখনও হাঁটু মুড়ে বসবেন না, পা ছড়িয়ে বসার অভ্যাস করতে হবে।
# প্রক্রিয়াজাত খাবার, রেড মিট, চিনি, ট্রান্স ফ্যাট খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
# ব্যথা বাড়লে মুঠো মুঠো বেদনানাশক ওষুধ খেলে সমস্যা কিন্তু কমবে না। উল্টো বিপদ আরও বাড়বে।
# একেবারেই শরীরচর্চা করা বন্ধ করা চলবে না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ফিটনেসবিদের নজরদারিতে হালকা ব্যায়াম নিয়মিতভাবে করতে হবে।
# জুতো বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। এমন জুতো পরা যাবে না, যাতে হাঁটুর ব্যথা আরও বেড়ে যায়, সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org