দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণত শীতকালে বাতাসে আপক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ কমে যায়। তাই ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়। তবে গ্রীষ্মকালে কিন্তু এমন সমস্যা হওয়ার কথা নয়!
গরমকালে বাইরে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন মাখতে ভুল হয় না। তবে বাড়ি ফিরে গোসল সেরে ময়েশ্চারাইজ়ার মাখার কথা অনেক সময় মনেই থাকে না। যে কারণে গোসল করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে পড়ে। প্রায় সারা বছরই ত্বক থেকে ছাল উঠছে বলে অভিযোগ করেন অনেকেই। শীতকালে বাতাসে আপক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণও কমে যায়। তাই ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে পড়ে। তবে গ্রীষ্মকালে তো তেমন সমস্যা হওয়ার কোনো কথা নয়! তাহলে কি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ বিদ্যমান?
# বাজারজাত বেশির ভাগ সাবান বা শ্যাম্পুতে ক্ষার থাকে। এই সব প্রসাধনী ব্যবহার করলে ত্বকের মধ্যে থাকা স্বাভাবিক তেল কিংবা সেবামের স্তর নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যে কারণে ত্বক খসখসে হয়ে যায়। যাদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তাদের শরীরের নানা জায়গা হতে ছাল উঠতে শুরু করে।
# কোন স্থানে পানির মান কেমন, তার উপরে অনেক কিছুই নির্ভর করে। পানির মধ্যে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ বেশি থাকলে তাকে ‘খর পানি’ বলা হয়। এই পানিতে গোসল করলে ত্বক ও চুলে এক ধরনের আস্তরণ পড়ে যেতে পারে। আর সেখান থেকেও ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে।
# আবার এই গরমের সময় বেশির ভাগ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকতে হয়। যে কারণে ত্বকের আর্দ্রতা নষ্ট হয়ে যায়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরের ভিতরের বাতাসও শুষ্ক হয়ে যায়। অনেকেই অভিযোগ করেন যে, এসি ঘরে থাকলে ত্বকের নানা রকম সমস্যাও হয়। এই বিষয়ে চিকিৎসকরা বলেছেন, বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা কমে গেলে গা চুলকায় বা র্যাশ কিংবা প্রদাহজনিত সমস্যাও তখন দেখা দিতে পারে।
# দীর্ঘক্ষণ ধরে গোসল করলেও অনেক সময় ত্বকের নিজস্ব ময়েশ্চার ব্যারিয়ার নষ্ট হয়। গরমকালে অনেকেই বার বার গোসল করেন। সেই কারণেও অনেক সময় ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়তেই পারে।
# অপরদিকে ৪০ বছর বয়সের পর হতে মানব শরীরে নানা ধরনের পরিবর্তন আসতে থাকে। বিভিন্ন হরমোনের উৎপাদন ও ক্ষরণ তখন কমে যায়। যে কারণে শুষ্ক হয়ে পড়ে ত্বক। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org