দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চাঁদের দূরবর্তী অঞ্চল হতে মাটি নিয়ে এলো চীন। পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র দেশ হিসেবে এমন অন্যান্য কীর্তি গড়লো দেশটি। যেখান থেকে মাটির নমুনা আনা হয়েছে সেটি পৃথিবী হতে দেখা যায় না।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে যে, ২৫ জুন মাটি নিয়ে আসা ক্যাপসুলটি মঙ্গোলিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল সিজিওয়াং ব্যানারে অবতরণ করেছে।
চাঁদের অদেখা অঞ্চল হতে মাটি আনতে চেং-৬ নামে একটি মনুষ্যবিহীন মহাকাশযান গত ৩ মে দক্ষিণ চীন হতে রওনা দেয়। তারপর ২ জুন এটি সফলভাবে চাঁদে অবতরণ করে। যেখানে এটি অবতরণ করে সেটি পৃথিবী হতে কখনও দেখা যায় না। চাঁদ পৃথিবীকে শুধুমাত্র এটির একটি পাশ দেখায়।
মহাকর্ষীয় প্রবাহবদ্ধতার কারণে চাঁদ যে সময়কালে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে- ঠিক সেই এটি তার নিজ অক্ষের ওপরে ঘুরতে থাকে। এর কারণে চাঁদ পৃথিবীর দিকে একই মুখ ঘুরিয়ে রাখে।
চীনে মহাকাশ সংস্থার চেং-৬ মিশনের ল্যান্ডারটি দুই দিন সময় নিয়ে চাঁদের সবচেয়ে পুরোনো ও বড় গর্ত হতে মাটি এবং পাথর সংগ্রহ করে। এইসব মাটি সংগ্রহ করতে ব্যবহার করা হয় ল্যান্ডারটিতে থাকা রোবটের হাত এবং ড্রিল মেশিন।
এরপর চাঁদের পৃষ্ঠতল হতে ল্যান্ডারটিকে অরবিটারের সঙ্গে আবার সংযুক্ত করা হয়। সবকিছু সম্পন্ন হওয়ার পর এটিকে পৃথিবীর দিকে নিয়ে আসা হয়।
লিস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্পদার্থবিদ্যা এবং মহাকাশ বিজ্ঞানের প্রভাষক মার্টিন বার্সট্রো বলেছেন যে, “এটি মূলত চীনের জন্য একটি বড় অর্জন। চাঁদ হতে যে কোনো নমুনা সংগ্রহ খুবই কঠিন একটি কাজ। দূরবর্তী অঞ্চল হতে এটি আরও কঠিন। যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই কঠিন ও কঠোর।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া) চাঁদের নিকটবর্তী অঞ্চল হতে মাটি এবং পাথরের নমুনা সংগ্রহ করেছে। তবে চীনই প্রথম দেশ যে- দূরবর্তী অঞ্চল হতে মাটি নিয়ে এলো।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org