দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে ’অকপট ও গঠনমূলক’ আলোচনা করেছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। নেতানিহুকে যুদ্ধ বন্ধ করতে বললেন কমলা হ্যারিস।
২৬ জুলাই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বিবৃতিতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বলেন, গাজার মানুষের অবর্ণনীয় দুর্দশার মধ্যে আমরা আমাদের বিবেককে অবশ হতে দিতে পারি না। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই যে যুদ্ধ শেষ না হলে, আমি চুপ করে বসে থাকবো না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক মনোনীত প্রার্থীর তালিকায় সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন কমলা হ্যারিস। গাজায় হতাহতের বিষয়ে তার উদ্বেগ অত্যন্ত স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেন তিনি। হোয়াইট হাউসে নেতানিয়াহুর সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনায় এই যুদ্ধ শেষ হওয়ার সময় এসেছে বলেও তাকে জানিয়েছেন।
কমলা হ্যারিস বলেছেন, ইসরায়েলের নিজেকে রক্ষা করার অধিকার রয়েছে; তবে বিষয় হচ্ছে সেটি কিভাবে। গত ৯ মাস ধরে গাজায় যা ঘটছে সেগুলো ভয়ঙ্কর। গাজা ট্র্যাজেডি থেকে আমরা কখনও চোখ ফিরিয়ে রাখতে পারি না। এতো কষ্ট দেখে আমরা চুপ করে বসে থাকতে পারি না।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর হতেই বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুদ্ধ বন্ধে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ দিয়ে আসছেন। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন কখনই এতোটা কড়া ভাষায় ইসরায়েলকে ধমক দেননি, যতোটা দিলেন কমলা হ্যারিস।
উল্লেখ্য, গাজায় ৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে ইসরায়েলি আগ্রাসন। এই সময়ের মধ্যে একবারও কমলা হ্যারিস ইসরায়েলের সমালোচনা করেননি কিংবা দেশটির নেতৃত্বকে যুদ্ধ বন্ধে কোনো রকম চাপও দেননি। তাই বাইডেন সরে যাওয়ার পর ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মনোনীত হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকা কমলার এমন কঠোর মন্তব্য বিশ্লেষকদের মধ্যে গুঞ্জনের জন্ম দিয়েছে যে, কমলা হয়তো ইসরায়েলকে ডিল করার ক্ষেত্রে বাইডেনের চেয়েও অনেক বেশি কঠোর অবস্থান নেবেন। তবে একদল বিশ্লেষক মনে করেন যে, কমলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেও ইসরায়েল এবং মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি খুব একটা পরিবর্তন হবে না।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org