দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের সব অবকাঠামো ধ্বংস করার নির্দেশ দিলেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। গতকাল সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর সদস্যদের এই নির্দেশ দেন এই যুদ্ধবাজ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী।
ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা গত সপ্তাহে ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিরে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ব্যালিষ্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এর জবাব দিতে তিনি এই নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসরায়েলি পার্লামেন্টে নেতানিয়াহু বলেন, আমি আমাদের বাহিনীকে হুথিদের অবকাঠামো ধ্বংস করার নির্দেশ দিয়েছি, কারণ হলো যে কেও আমাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করলে তাকে পুরো শক্তি দিয়েই আঘাত করা হবে। সময় লাগলেও শক্তি এবং বুদ্ধিমত্তা দিয়ে আমরা ‘অশুভ’ শক্তিকে দমন করতে থাকবো।
নেতানিয়াহু আরও বলেন, গাজায় হামাসের সঙ্গে চলমান জিম্মি মুক্তির আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে তবে ফলাফল আসতে কতোটা সময় লাগবে তা তিনিও জানেন না। তবে, এই যুদ্ধে ইসরায়েল বিভিন্ন ফ্রন্টে সামরিকভাবে বিজয় লাভ করেছে ও হামাসের ওপর সামরিক চাপও অব্যাহত রেখেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল একটি আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে তার অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে। একইসঙ্গে ইসরায়েলের মার্কিন মিত্রদের সঙ্গে আব্রাহাম চুক্তি সম্প্রসারণের পরিকল্পনাও করেছে।
তিনি আরও বলেন, গাজার যুদ্ধ আরব দেশগুলোর সঙ্গে নতুন শান্তি চুক্তি সই ও মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন করার সুযোগও করে দিয়েছে। মধ্যপন্থী আরব দেশগুলো ইসরায়েলকে একটি আঞ্চলিক শক্তি ও সম্ভাব্য মিত্র হিসেবেই দেখে। আমি এই সুযোগটিই পুরোপুরি কাজে লাগাতে চাই।
আমাদের মার্কিন বন্ধুদের সঙ্গে একত্রে আব্রাহাম চুক্তি সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনাও করছি। আর এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা আরও নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন হবে বলে দেশটির সংসদে বলেছেন ইরায়েলের প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, প্রথম মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ইসরায়েল এবং কিছু আরব রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তির কথাও হয়েছিল। ইসরায়েলের অর্থনীতি শক্তিশালী এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করেছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org