দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমানে পুরো বিশ্বই প্রযুক্তির উৎকর্ষে আবর্তিত হচ্ছে। বিশেষ করে স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক তৈরিতে সবাই যেনো প্রতিযোগিতা শুরু করেছে।
পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে কৃত্রিম উপগ্রহ কিংবা স্যাটেলাইট পাঠানোর মাধ্যমে সারাবিশ্বব্যাপি মোবাইল ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট–সেবা দিচ্ছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিংক। স্টারলিংকের বিকল্প হিসেবে ধীরে ধীরে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক তৈরি করতে যাচ্ছে চীনের ইন্টারনেট–সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গিস্পেস। ইতিমধ্যেই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট–সেবাও দিচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানটি। এক বিবৃতিতে গিস্পেস জানিয়েছে যে, এ পর্যন্ত ৩০টি কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়েছে এই সংস্থাটি। এই স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক সার্বক্ষণিক বিশ্বে ৯০ শতাংশ এলাকায় ইন্টারনেট–সেবা দিতে সক্ষম। উপগ্রহ গবেষণা, উৎক্ষেপণ এবং পরিচালনার জন্য ২০১৮ সালে গিস্পেস প্রতিষ্ঠা করেছিলো গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গিলে।
গিস্পেসের স্যাটেলাইট পৃথিবীর পৃষ্ঠ হতে ৩০০ হতে ২ হাজার কিলোমিটার উচ্চতায়ও কাজ করেছে। সস্তা হওয়ার কারণে এইসব স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দ্রুত ইন্টারনেট–সেবাও দেওয়া যায়। এই সংস্থাটি ২০২২ সালে প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছিলো। গিস্পেস সব মিলিয়ে প্রায় ৬ হাজার স্যাটেলাইটের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করার পরিকল্পনাও করেছে। তাই স্টারলিংকের বিকল্প হিসেবেও বিবেচনা করা হচ্ছে গিস্পেসকে।
গিস্পেস ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ সারা বিশ্বে ইন্টারনেট–সেবা দিতে ৭২টি উপগ্রহ কক্ষপথে পাঠাবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে মুঠোফোন যোগাযোগের জন্য ২৬৪টি স্যাটেলাইটও পাঠাবে এই প্রতিষ্ঠানটি। তৃতীয় ধাপে উচ্চগতির এই ব্রডব্যান্ডের জন্য পাঠানো হবে ৫ হাজার ৬৭৬টি স্যাটেলাইট। স্টারলিংক বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার উপগ্রহ ব্যবহারের মাধ্যমে সারাবিশ্বে ইন্টারনেট–সেবা দিচ্ছে।
গিস্পেসের পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি চীনা প্রতিষ্ঠানও পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর জন্যও কাজ করছে। গত আগস্ট মাসে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এন্টারপ্রাইজ সাংহাই স্পেসকম স্যাটেলাইট টেকনোলজি তাইয়ুয়ান হতে একাধিক স্যাটেলাইটও পাঠিয়েছে। সেই নেটওয়ার্ক জি৬০ স্টারলিংক প্ল্যান নামে পরিচিত। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই বছর ১০৮টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করবে এই সংস্থাটি। ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ ৬৪৮টি উপগ্রহ ও ২০৩০ সালের পূর্বে ১৫ হাজার কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপনেরও পরিকল্পনা রয়েছে এই সংস্থাটির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org