দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার কী পেট পরিষ্কার হতে চায় না? সে কারণে স্টুল সফটনার ওষুধ খাচ্ছেন? সেইক্ষেত্রে ওষুধ ছেড়ে ভরসা রাখতে পারেন একটি সজজির উপর, আর তা হলো ঝিঙের উপর। এতেই সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারবেন অনায়াসে।
আমাদের মধ্যে অনেকেই নিয়মিত ভুগে থাকেন কোষ্ঠকাঠিন্যে। সকাল বেলায় পেট পরিষ্কার হতে চায় না। যে কারণে তাদের পিছু নেয় গ্যাস, অ্যাসিডিটি থেকে শুরু করে নানা জটিল সমস্যা। তাই তারা সমস্যা সমাধানে নিয়মিত স্টুল সফটনার ওষুধও খেয়ে থাকেন। তবে মনে রাখতে হবে, বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া এই ধরনের ওষুধ খাওয়া একবারেই ঠিক নয়। এই ভুলটা করলে আদতে শরীরের বারোটা বেজে যাবে।
তাই পরিস্থিতি খারাপ দিকে যাওয়ার পূর্বেই আপনাকে এই ধরনের ওষুধ খাওয়া আগে ছাড়তে হবে। তার বদলে ভরসা রাখতে পারেন ঝিঙের মতো উপকারী সবজির উপর। এতেই এই সমস্যাকে বশে আনতে পারবেন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে পাওয়া যাবে মুক্তি
এই পরিচিত সবজি ঝিঙেতে রয়েছে ফাইবারের ভাণ্ডার। এই উপাদান অন্ত্রে মলের গতিবিধি বেশ বাড়ায়। যার দরুন খুব সহজেই পেট পরিষ্কার হবে। শুধু তা-ই নয়, নিয়মিত এই সবজি খেলে কোলোনের হালও ফিরবে। সেখানে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা হু হু করে বাড়বে। সে কারণেও সুস্থ থাকে শরীর। এড়িয়ে চলা যায় একাধিক পেটের অসুখের ফাঁদ থেকে। তাই আপনার রোজের ডায়েটে অবশ্যই ঝিঙের মতো একটি উপকারী সবজিকে জায়গা করে দিতে পারেন।
তবে শুধু কনস্টিপেশনকে বাগে আনাই বিষয় নয়, সেইসঙ্গে আরও একাধিক উপকার করে এই ঝিঙে। আসুন সেই বিষটি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
চোখের উপকার হবে
আমাদের মধ্যে অনেকেই চোখের জ্যোতিও বাড়াতে চান। সেই কাজেও আপনাকে যোগ্য সঙ্গত দিতে পারে এই সবজি ঝিঙে। কারণ হলো, এতে রয়েছে ভিটামিন এ’র ভাণ্ডার। এই ভিটামিন চোখের ক্ষয়ক্ষতি রোধ করতে সাহায্য করে। আর বাড়ায় দৃষ্টিশক্তি। শুধু তা-ই নয়, এই সবজিতে মজুত ক্যারোটিনের গুণে চোখের অপটিক নার্ভও সুস্থ থাকে। এমনকি এই অঙ্গে উপস্থিত ক্ষতিকর ফ্রি রেডিকেলসও বেরিয়ে যায়। তাই চোখের হাল ফেরাতে চাইলে নিয়মিত ঝিঙে খেতে হবে!
অ্যানিমিয়ার দাওয়াই
অ্যানিমিয়া একটি জটিল অসুখ। এই রোগের ফাঁদে পড়লে পিছু নিতে পারে দুর্বলতা। সেইসঙ্গে ভোগাতে পারে শ্বাসকষ্টও। তাই এই রোগ থেকে দ্রুত সেরে ওঠাটা জরুরি। সেই কাজেও আপনার হাতের পাঁচ হতে পারে এই ঝিঙে।
ওজন কমবে
শরীরে মেদের বহর বাড়লেই মুশকিলে পড়েন অনেকেই! সেই ক্ষেত্রে পিছু নিতে পারে একাধিক জটিল রোগ। তাই যেভাবেই হোক ওজন কমানোর কাজে লেগে পড়তে হবে। সেই লক্ষ্যপূরণে যতোদ্রুত সম্ভব শরণাপন্ন হবে ঝিঙের।
লিভার সুস্থ-সবল থাকবে
আপনি কি লিভার সুস্থ-সবল রাখতে চান? তাহলে যতো দ্রুত সম্ভব ঝিঙে খাওয়া শুরু করুন। কারণ হলো, এতে উপস্থিত রয়েছে অত্যন্ত উপকারী কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা লিভারের হাল ফেরাতে যথেষ্ট সাহায্য করে।
তবে এই প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যেই লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org