দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন যে, গাজা উপত্যকায় বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে পুরোপুরিই ব্যর্থ হয়েছে জাতিসংঘ।
কেবল তাই নয়, জাতিসংঘের পতাকাকেও এখন লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে বর্বর ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
সংবাদ সংস্থা তাসের এক খবরে বলা হয়, রাশিয়ার এই কূটনীতিক আরও বলেন, গাজায় জাতিসংঘের স্কুল, হাসপাতাল ও শরণার্থী শিবিরগুলোতেও অবিরাম গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে।
গাজার হাসপাতালে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসকদের উদ্ধৃতি দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যম বলেছে যে, প্রায় প্রতিদিনই শিশুদের মাথায় গুলি করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করা হচ্ছে গাজায়। ২ হতে ১২ বছরের শিশুদেরও নির্বিচারে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করছে ইসরায়েল। তিনি ফিলিস্তিনসহ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সভায় এইসব কথা বলেছেন।
রাশিয়ার এই কূটনীতিক জোর দিয়ে বলেন যে, এইসব ঘটনা থেকে এটিই প্রতীয়মান হয় যে- গাজায় জাতিসংঘের পতাকা শুধু বেসামরিক নাগরিক, মানবাধিকার কর্মী ও বেসামরিক অবকাঠামো রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে না, বরং আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটি নিজেই আইডিএফের সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে।
জাতিসংঘের ত্রাণ অফিস ও ত্রাণকর্মীদের ওপর গুলি চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজায় এখন কোনো নিরাপদ স্থানই বাকি নেই। মূলত এটি একটি তিক্ত বাস্তবতা।
ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন, নারী এবং শিশুসহ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে, অথচ পশ্চিমারা এখনও মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন।
তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫৫ ফিলিস্তিনিকে হত্যা এবং ৩২৯ জনেরও বেশি বেসামরিক মানুষকে আহত করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org