দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পানিতে পা ডুবিয়ে বসে থাকলে মাইগ্রেনের ব্যথা কমবে! এই ধারণার কী আদতেও কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি রয়েছে? কী বলছেন চিকিৎসক? আজ সেই বিষয়টি আমরা জেনে নেবো।
মাইগ্রেনের যন্ত্রণা কতোটা কষ্টদায়ক, সেটি যার হয়, কেবলমাত্র তিনিই বোঝেন। মাইগ্রেন সহজেই পিছু ছাড়ার অসুখ নয়। একবার এই যন্ত্রণা শুরু হয়ে গেলে, কিছুতেই আর কমতে চায় না। ব্যথার ওষুধ খেয়ে খানিকটা স্বস্তি পাওয়া যায়, তা একেবারেই সাময়িক। শরীর কাহিল হয়ে না পড়া পর্যন্ত যন্ত্রণা সেটি হতেই থাকে। মাইগ্রেনের রোগীরা অনেকেই এই ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়ও খোঁজেন। নিজেকে চিকিৎসক বলে দাবি করে মিরো ফিগুরা নামে একজন মহিলা ইনস্টাগ্রামে সাময়িকভাবে মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর উপায়ও জানিয়েছেন। মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হলে সঙ্গে সঙ্গেই পেনকিলার খেতে বারণ করেছেন তিনি। কারণ হলো, ব্যথানাশক ওষুধ কিডনি, লিভারের ক্ষতি করে। বদলে মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে গরমজলে পা ডুবিয়ে বসে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তার দাবি, এতে ব্যথাও কমবে। আবার স্বস্তিও পাওয়া যাবে। মাথা যন্ত্রণা কী সত্যিই পানিতে পা ডুবিয়ে বসে থাকলে কমে যাবে? আদৌ এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি রয়েছে?
এই বিষয়ে চিকিৎসক সব্যসাচী মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘গরম পানিতে পা ডুবিয়ে বসে থাকলে মাইগ্রেনের ব্যথা উধাও হয়ে যাবে- এর কোনও রকম নিশ্চয়তা নেই। তবে এই ক্ষেত্রে একটু অন্যভাবে ভাবা যেতেই পারে। গরম পানিতে পা ডোবালে শরীরে রক্ত সঞ্চালন একেবারেই স্বাভাবিক থাকে। রক্ত চলাচলের গতি ঠিক থাকলে মস্তিষ্কেও অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে খুব সহজেই। তাতে ব্যথা-বেদনা খানিকটা কমে যায়। তবে মাইগ্রেনের সঙ্গে পানিতে পা ডুবিয়ে বসে থাকার কোনও সরাসরি যোগসূত্র নেই। এমন কোনও গবেষণা রয়েছে বলেও আমার জানা নেই।’’
মাইগ্রেন থাকলে ওষুধ খাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। সেইসঙ্গে, জীবনযাপনেও বদল আনতে হবে। জীবনে ঠিক কোন বদলগুলো আনলে মাইগ্রেন দূরে থাকবে, বললেন চিকিৎসক।
# অবশ্যই সঠিক সময় ঘুমোতে হবে। কেও যদি প্রতিদিন রাত ৩ টার সময় ঘুমোতে যান এবং দুপুর ১২টায় ওঠেন, তাহলে মাইগ্রেন হতে বাধ্য।
# সারাদিন যন্ত্র থেকে যতোটা দূরে থাকা যায়, ততোই ভালো। কাজের প্রয়োজনে সব সময় সম্ভবও হয় না। তবে, যন্ত্রের ব্যবহার কম করাটা জরুরি। বিশেষ করে যাদের মাইগ্রেন রয়েছে, তাদের এই নিয়ম মেনে চলতে হবে।
# ভাজাভুজি বেশি খাওয়া যাবে না। ঘরোয়া খাবারই বেশি খেতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবারও মাইগ্রেনের জন্য বেশ ক্ষতিকারক।
# শরীরচর্চা করতে পারলে আরও ভালো হয়। এতে রক্ত সঞ্চালনও ভালো থাকে। আবার পেশিগুলোও সচল থাকে। শুধু মাইগ্রেন বলেই নয়, যে কোনও ব্যথা থেকেও দূরে থাকা সম্ভব। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org