দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের প্রথম সিডিএমএ প্রযুক্তি ব্যবহারকারী মোবাইলফোন অপারেটর সিটিসেল আবারও সাশ্রয়ী কলরেটের মাধ্যমে দেশের টেলিকম বাজারে ফিরে আসতে যাচ্ছে।
সম্প্রতি রাজধানীর মহাখালীতে সিটিসেলের প্রধান কার্যালয় হতে এই তথ্য জানানো হয়। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে নতুন করে কার্যক্রম শুরু করার মাধ্যমে গ্রাহকদের আরও সাশ্রয়ী কলরেটের সুযোগ দিতে প্রস্তুতী নিচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
১৯৮৯ সালে বিটিআরসি হতে মোবাইলফোন সেবা চালুর অনুমতি পায় বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (বিটিসিএল)। পরবর্তী সময় ১৯৯০ সালে হংকং ভিত্তিক হাচিসন টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেড এই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে এই কোম্পানির নাম পরিবর্তন হয়ে যায় হাচিসন বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (এইচবিটিএল)। ১৯৯৩ সালে এর মালিকানায় আবারও পরিবর্তন আসে। প্যাসিফিক মটরস এবং ফারইস্ট টেলিকম সিটিসেলের শেয়ার কিনে নেয়। তারপরই কোম্পানির নাম পরিবর্তন হয়ে এটি সিটিসেল হিসেবে পরিচিতি পায়। ২০০৪ সালে সিঙ্গাপুরের সিংটেল গ্রুপ সিটিসেলে বিনিয়োগ করেছিলো।
তবে সিটিসেলের পথচলা খুব সহজ ছিল না। ২০০৭ সালে সিটিসেল তাদের নতুন লোগো উন্মোচন করে। তবে গ্রাহক সংখ্যায় পিছিয়ে পড়ে এই কোম্পানিটি। ২০১৬ সালে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তৎকালীন সরকারের সিদ্ধান্তে সিটিসেলের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং এর লাইসেন্স বাতিল করা হয়। ২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর বিটিআরসি সিটিসেলের কার্যক্রমও বন্ধ করে দেয়, যেটি পরে ৩ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আদেশে সাময়িকভাবে পুনরায় চালু করা হয়। তবে ৬ নভেম্বর আবারও বন্ধ হয়ে যায়। ২০২৩ সালে চূড়ান্তভাবে সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিল হয়।
গত ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি পাঠিয়ে সিটিসেল তাদের অপারেটিং ও রেডিও ইকুইপমেন্ট লাইসেন্স দু’টি ফেরত চেয়েছে। চিঠিতে সিটিসেল দাবি করেছে যে, রাজনৈতিক কারণে তাদের তরঙ্গ স্থগিত করা হয় এবং তারা সাবেক টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমকে এর জন্র দায়ী করেছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, সিটিসেল তাদের আবেদন পাঠিয়েছে ও তারা শীঘ্রই কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করবে। তারপর আবেদন পর্যালোচনা করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org