দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পৃথিবীতে মাঝে-মধ্যেই কিছু গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এসব গুজব থমকে দেয় পৃথিবীকে। এমন ৪টি গুজব সম্পর্কে আজকের প্রতিবেদন। ওই ৪টি গুজব পৃথিবীকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল!
এমন ৪টি গুজব ঘটেছিল যা জনগণ সেই সব রটনাকে ঘটনা বলে ধরে নিয়ে এমন গোলমেলে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। সেগুলো সামলাতে বেশ হিমশিম খেতে হয় প্রসাসন ও গণমাধ্যমকেও।
একটি কথা প্রচলিত রয়েছে, আর তা হলো, গুজবে কান দেবেন না। এই সাবধানবাণী সত্ত্বেও গুজব রটে যায় সবার অজান্তেই। সেটি এক সময় দাবানলের মতো ছড়িয়েও পড়ে পৃথিবীময়। যারা এই গুজব-প্রবাহ হতে নিজেদের সরিয়ে রাখতে চান তারাও এক সময় ব্যর্থ হন সেই বন্যা হতে বাঁচতে।
তেমন ৪টি ‘মহাগুজব’-এর কাহিনী আজকের এই প্রতিবেদনে।
১. ২০১৫-এর ২৪ জুলাই-এর ঘটনা। সেদিন ব্রিটেনের ‘ডেলি এক্সপ্রেস’-এ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ব্রিটেনের স্কুলগুলিতে ইংরেজি ভাষার ব্যবহার উঠে যেতে বসেছে! ইমিগ্রেশনকেই এর জন্য দায়ি করা হয়। এই ‘খবর’ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীময়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় সেই পোস্টটি। পরে প্রমাণিত হয়, ওই সমীক্ষায় উল্লিখিত পরিসংখ্যানগুলিকে এদিক-ওদিক করা হয়েছিল। দু’টি ভাষা বলতে পারে এমন একটি তথ্য স্কুলছাত্রদের ইংরেজি জানে না বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় তীব্র জাতিবিদ্বেষ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। এটি সামল দিতে দম বেরিয়ে যায় প্রশাসনের।
২. ২০১৫ গুজব ছড়ায় যে, মাইকেল জ্যাকসন বেঁচে আছেন! একটি ফেক ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করে জানানো হয় যে, মাইকেলকে বহাল তবিয়তে প্যারিসের রাস্তায় ঘুরতে দেখা গেছে। সোশ্যাল মিডিয়াবাজরা ঝাঁপিয়ে পড়েন এই ভিডিও নিয়ে। তুমুল তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়ে যায। মাইকেল-ফ্যানবৃন্দ হাপুস নয়নে পোস্ট করতে থাকেন তাদের আইডলকে স্টেজে ফিরে পাবার আশায়। তবে পরে জানা যায় ভিডিওটি ছিলো ‘ফেক’। যাবতীয় আবেগ নিমেষেই নিভে যায়।
৩. মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সম্পর্কে প্রায়শই যে গুজবটি মাথা চাড়া দিয়ে থাকে, সেটি হলো তাঁর ধর্মবিশ্বাস নিয়ে। তাঁর মধ্যনাম ‘হুসেন’-এর কারণেই এই গুজবটি রটে থাকে। ইসলামিক টেররিজমের সূত্র ধরে ওবামার নীতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন দেশের সাধারণ মানুষ। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, এখনও ২০ শতাংশ মার্কিন নাগরিক, ৩১ শতাংশ রিপাবলিকান বিশ্বাস করেন যে, ওবামা ইসলাম ধর্মাবলম্বী!
৪. এ ঘটনাটি ২০১৪ সালের কথা। তখন মার্কিন কমেডিয়ান জোয়ান রিভারস এক অতি খাজা কমেডি শো-তে ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামাকে ‘রূপান্তরকামী’ বলে আখ্যায়িত করেন। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক উঠলে রিভারস ক্ষমা চাইতে অস্বীকারও করেন। তিনি বলেন, রূপান্তরকামীরা সুন্দর মানুষ, এতে অপমানের কী হলো? রিভারসের এই রসিকতাকে সত্যি ধরে নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়ে দাবানলের মতো। অনেকেই বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে মিশেল তাঁর সেক্সুয়াল আইডেন্টিটি গোপন রেখেছেন। চরম অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় ওই গুজবকে ঘিরে।